প্রশ্ন
আমি একটি দোকান ভাড়া নিতে গেলে দোকানের মালিক আমাকে বলে, তাকে সিকিউরিটি হিসেবে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিতে হবে। যদি কখনো আমি দোকানের ভাড়া ছেড়ে দিই তাহলে তিনি আমাকে এই পঞ্চাশ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে দিবেন। জানতে চাই, দোকানের মালিককে ভাড়ার অতিরিক্ত পঞ্চাশ হাজার দিয়ে দোকান ভাড়া নিলে সেটা জায়েয হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত পন্থায় দোকানের মালিককে অগ্রিম পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়াকে ইসলামি আইনের পরিভাষায় বন্ধক বলা হয়। আর কোনো কিছু বন্ধক রাখা শরিয়তে জায়েয আছে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.), আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.), ইবরাহিম নাখায়ি (রহ.), শাবী (রহ.) প্রমুখ সাহাবা-তাবেয়ি থেকে বর্ণিত আছে, তারা বলেন, আগাম বিক্রিতে বিক্রেতা থেকে বন্ধক নিলে তাতে কোনো অসুবিধা নেই। [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১৪০৮৬, ১৪০৮৭, ১৪০৯০]
তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে একটি সমস্যা হলো, যেহেতু এখানে উল্লিখিত পঞ্চাশ হাজার টাকা বন্ধক হিসেবে বিবেচিত সেহেতু দোকানের মালিকের জন্য উক্ত টাকা খরচ করা জায়েয হবে না। বরং কোথাও তা জমা রেখে দিতে হবে। কারণ বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া জায়েয নয়।
ইবনে সিরিন (রহ.) থেকে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) এর নিকট এক ব্যক্তি এসে বলল, আমার কাছে এক ব্যক্তি একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে। আমি এতে আরোহণ করেছি। তখন আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন, তুমি এর পিঠ থেকে (আরোহণ করে) যে উপকৃত হয়েছ তা সুদের অন্তর্ভুক্ত। [মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১৫০৭১]
তাই দোকানের মালিকের জন্য এ টাকা খরচ করা জায়েয হবে না। এ ক্ষেত্রে পঞ্চাশ হাজার টাকাকে যদি এভাবে ধরা হয় যে প্রতি মাসের ভাড়ার টাকার সাথে এখান থেকে কিছু টাকা ভাড়া হিসেবে কাটা যাবে তাহলে তাতে আর কোনো সমস্যা থাকে না।
শরহুল মাজাল্লাহ ৩/২১২; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم