প্রশ্ন
আমাদের গ্রামে মৃত ব্যক্তির ইসালে সওয়াবের জন্য তিন দিনা,সাত দিনা,চল্লিশা সহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান করা হয়। এবং মেহমাদরির ব্যবস্থা করা হয়। শরিয়তের দৃষ্টিতে এগুলোর বিধান কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
মৃত ব্যক্তির মাগফিরাতের জন্য দোয়া করা এবং বিভিন্ন নফল ইবাদত করে তার সওয়াব মৃতকে পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল,যা বহু দলিল দ্বারা প্রমাণিত। তবে এটি একটি ব্যক্তিগত আমল। কোনো দিন-তারিখ ও আনুষ্ঠানিকতা ছাড়াই যখন ইচ্ছা তখনই এ আমল করা যায়।
কিন্তু বর্তমানে এই আমলের সাথে আরও কিছু খারাপ বিষয় যুক্ত হয়ে গেছে। যেমন:
১.তিন দিনা,সাত দিনা,একুইশা,চল্লিশা নামে এ সকল অনুষ্ঠান যথাক্রমে মৃত্যুর ৩য়, ৭ম, ২১ ও ৪০ তম তারিখে করাকে জরুরি মনে করা হয়। অথচ শরয়ি দলিল-প্রমাণ ছাড়া কোনো আমলের জন্য বিশেষ দিন-তারিখ নির্ধারণ করে নেওয়া বিদআত ও নাজায়েয।
২.ইসালে সাওয়াবের প্রচলিত পন্থায় আরেকটি বড় সমস্যা মেহমানদারির ব্যবস্থা করা। অথচ মেহমানদারি তো হয় আনন্দের সময়। দুঃখের বিষয়কে কেন্দ্র করে নয়।
হাদিস শরিফে এসেছে, হযরত জারীর ইবনে আবদুল্লাহ আলবাজালী (রা:) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন,
আমরা (সাহাবাগণ)দাফনের পর মৃতকে কেন্দ্র করে সমবেত হওয়া ও খাবারের আয়োজন করাকে নিয়াহা বলে গণ্য করতাম। [মুসনাদে আহমদ ২/২০৪; ইবনে মাজাহ ১৬১২]
৩. কুরআন খতম করিয়ে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়। অথচ এ ক্ষেত্রে কুরআন খতম করে বিনিময় নেওয়া নাজায়েয।
এ ধরনের আরও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। সুতরাং ইসালে সওয়াবের উল্লিখিত পন্থা পরিহার করা উচিত।
মুসনাদে আহমদ ২/২০৪; ইবনে মাজাহ পৃ. ১১৭; মাজমাউয যাওয়াইদ ৪/১৭০; শিফাউল আলীল ১/১৭৫; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ১/৮১; রদ্দুল মুহতার ২/২৪০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم