প্রশ্ন
আমাদের মসজিদের খতীব সাহেব জুমার খুতবা দেওয়ার সময় হাত নাড়া চাড়া করে খুতবা দেন। আমার জানার বিষয় হলো, জুমার খুতবা পাঠ করা অবস্থায় এভাবে হাত নাড়াচাড়া করা যাবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
জুমার খুতবায় সাধারণ বয়ান-বক্তৃতার মতো হাত নাড়া চাড়া করা যাবে না। আরবদের মাঝে সাধারণ বয়ান-বক্তৃতায় দুই হাত নেড়ে কথা বলার রীতি থাকা সত্ত্বেও খোলাফায়ে রাশেদীন, তাবেঈন ও তাবেতাবেঈগণ জুমার খুতবায় এমনটি করতেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। সুতরাং দুই হাত স্বাভাবিক অবস্থায় রেখে খুতবা দেওয়াই সুন্নাহ সম্মত পদ্ধতি। তবে কখনো কোনো কিছু বোঝানোর স্বার্থে রাসূল (সা.) শাহাদাত আঙ্গুল দ্বারা ইশারা করেছেন এমন বর্ণনা হাদিস শরিফে বিদ্যমান রয়েছে।
হযরত জাবের ইবনে আব্দুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন-
كَانَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ إِذَا خَطَبَ احْمَرّتْ عَيْنَاهُ، وَعَلَا صَوْتُهُ، وَاشْتَدّ غَضَبُهُ، حَتّى كَأَنّهُ مُنْذِرُ جَيْشٍ يَقُولُ: صَبّحَكُمْ وَمَسّاكُمْ، وَيَقُولُ: بُعِثْتُ أَنَا وَالسّاعَةُ كَهَاتَيْنِ، وَيَقْرُنُ بَيْنَ إِصْبَعَيْهِ السّبّابَةِ، وَالْوُسْطَى.
রাসূল (সা.) যখন খুতবা দিতেন তাঁর চোখ দুটো লাল হয়ে যেত, তাঁর আওয়াজ উঁচু হয়ে যেত এবং তার ক্রোধ তীব্র হয়ে যেত, মনে হত তিনি কোনো সৈন্যবাহিনীকে সতর্ক করছেন। … এবং বলতেন, আমার প্রেরণ এবং কেয়ামত এই দুটির মতো (নিকটবর্তী)। এরপর তিনি তর্জনী ও মধ্যমা আঙ্গুলদ্বয়কে একত্র করে দেখালেন। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৬৭)
খুতবার সময় হাত উঠানোর ব্যাপারে এতটুকুই পাওয়া যায়। সুতরাং খুতবা অবস্থায় হাত নাড়া চাড়া করা ঠিক নয়।
-সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৮৭৪; কিতাবুল উম্ম ১/২৩০; ফতহুল মুলহিল ২/৪১৪; বাযলুল মাজহুদ ৬/১০৬; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৩/১৮০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم