প্রশ্ন
বর্তমানে بيع الوفاء করা যাবে কি? এক্ষেত্রে দেখা যায় কোনো ব্যক্তি থেকে ঘর বাড়ি بيع الوفاء করে বিক্রেতাকে সেই ঘরে ভাড়ার বিনিময় থাকতে দেওয়া হয়। এখানে বিক্রেতা ক্রেতাকে ঘর খালি করে বুঝিয়ে না দিয়ে শুধু মৌখিক বা কাগজে লিখিত চুক্তি করে নেয়। এখন প্রশ্ন হল, এমনটা করলে তা জায়েয হবে কি? আর জায়েয না হলে জায়েযের সুরত কী হবে? যদি ঘর/বাড়ি খালি করে ক্রেতাকে বুঝিয়ে দেয় তখন সে বাড়িটি বিক্রেতাকে ভাড়ার বিনিময়ে থাকতে দেয়া যাবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
الوفاء নামটিতে بيع তথা বিক্রি শব্দ থাকলেও এটি মূলত বন্ধকী চুক্তি। শরীয়তের ক্রয়-বিক্রয় নীতিমালার সাথে এর কোনো মিল নেই। শরীয়তের নিয়ম হল, ক্রয়কৃত বস্তুর উপর ক্রেতার নিরঙ্কুশ অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। সে যেমনিভাবে এটি ভোগ করতে পারে, তেমনিভাবে চাইলে তা বিক্রি বা দানও করতে পারে। অথচ بيع الوفاء-এর ক্ষেত্রে ক্রেতার এ ধরনের এখতিয়ার অর্জিত হয় না। এমনকি সে তা নিজ ইচ্ছা অনুযায়ী ভোগও করতে পারে না। এতে কোনো স্থায়ী ইমারতও নির্মাণ করতে পারে না।
এই কারণেই ফকীহগণ বলেন, এতে ক্রয়-বিক্রয় শব্দ ব্যবহার করা হলেও মূলত ঋণ প্রদান করে ঋণগ্রহীতার কোনো বস্তু থেকে উপকৃত হওয়াই এ চুক্তির উদ্দেশ্য থাকে। আর ঋণপ্রদান করে ঋণগ্রহীতার কোনো বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া সুদের অন্তর্ভুক্ত। এক্ষেত্রে ক্রয়-বিক্রয় শব্দ ব্যবহার করা হলেও তা জায়েয হবে না। ফকীহ আবুল হাসান মাতুরীদীসহ জুমহুর ফুকাহায়ে কেরাম একে নাজায়েয বলেছেন।
আর بيع الوفاء যেহেতু বৈধ নয়, তাই بيع الوفاء চুক্তিতে কোন ব্যক্তি থেকে ঘর/বাড়ি নিয়ে তা ঐ ব্যক্তিকে বা অন্য কাউকে ভাড়া দেওয়াও বৈধ হবে না। চাই ঘর/বাড়ি খালি করে তাকে বুঝিয়ে দেওয়া হোক বা ভাড়াটিয়া নামে নিজেই তাতে অবস্থান করুক।
-রদ্দুল মুহতার ৫/২৭৬, ৬/৪৮২; ইমদাদুল ফাতাওয়া ৩/১০৬; মাজাল্লাতু মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, সংখ্যা ৭, ৩/৫৫৭
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم