প্রশ্ন
আমার পিতা জীবদ্দশায় মসজিদ সংলগ্ন চার শতক জমি ক্রয় করেন মসজিদে অবস্থিত হেফজ খানার জন্য ওয়াকফ করার উদ্দেশ্যে। পরে আমার বাবা লিখিতভাবে ওয়াকফের কাজ সম্পন্ন করার আগেই মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি আমাকে এবং আমাদের সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিদেরকে ওয়াকফের কাজ সমাপ্ত করার আদেশ করে যান। আমরা তার নির্দেশ অনুযায়ী ওয়াকফের কাজ সম্পন্ন করি। এখন আমরা জানতে চাচ্ছি, মসজিদ-মাদরাসা কমিটির সম্মতিক্রমে ওসিয়তকারীর উত্তরাধিকারীরা ওয়াকফকৃত জমি সামাজিক কোনো কাজে ব্যবহার করার (পারিবারিক কবরস্থান বানানোর) জন্য ফেরত নিতে অথবা রদবদল করতে পারবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত বর্ণনা মতে ঐ জমিটি হেফজখানার জন্যই ওয়াকফ হয়ে গেছে। আপনার পিতার মৌখিক বলার দ্বারাই এ ওয়াকফ সম্পন্ন হয়েছে। এরপর তার ওয়ারিসদের জন্য জমিটি ফেরত নেয়া বা অন্য কোনো দ্বীনী বা সামাজিক কাজে ব্যবহার করা যেমন কবরস্থান বানানো ইত্যাদি জায়েয নয়। এমনকি মুতাওয়াল্লী বা কমিটির সদস্যগণ একমত হয়েও জমিটি অন্য কাজে লাগাতে পারবেন না।
হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাল্লাহ (সা.)-এর সময়ে উমর (রা.) নিজের কিছু সম্পত্তি সদকা করেছিলেন, তা ছিল ‘ছামগ’ নামক একটি খেজুর বাগান। উমর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি সম্পদ পেয়েছি যা আমার নিকট খুবই পছন্দনীয়। আমি এটি সদকা করতে চাচ্ছি। নবী (সা.) বললেন-
تَصَدّقْ بِأَصْلِهِ، لاَ يُبَاعُ وَلاَ يُوهَبُ وَلاَ يُورَثُ، وَلَكِنْ يُنْفَقُ ثَمَرُهُ.
মূল সম্পদটি এভাবে সদকা করো যে, তা বিক্রি করা যাবে না। দান করা যাবে না এবং কেউ ওয়ারিস হবে না; বরং তার ফল দান করা হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৭৬৪)
সুতরাং প্রশ্নোক্ত ওয়াকফ-সংশ্লিষ্ট সকলের দায়িত্ব, উক্ত জমি ফেরত নেওয়া বা রদবদল করা কিংবা অন্য কোনো কাজে ব্যয় করা থেকে বিরত থাকা এবং জমিটিতে দ্রুত হিফজখানার জন্য দলীল করে তাতে হিফজখানা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করা।
-আলবাহরুর রায়েক ৫/২০৭; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/২৮৫; রদ্দুল মুহতার ৪/৩৪৯, ৩৮৮
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم