প্রশ্ন
আমার স্ত্রীর উপর হজ্ব ফরয হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে আমি দেশের বাইরে আছি। আমরা দু’জন একসাথে হজ্ব পালন করব। বাংলাদেশ থেকে আমার স্ত্রীকে শ্বশুর সৌদি এয়ারলাইন্স পর্যন্ত দিয়ে যাবেন আর আমি এদিক থেকে তাকে রিসিভ করব। এখন হুযুরের কাছে জানতে চাচ্ছি, বাংলাদেশ থেকে বিমানে সৌদি আসতে মাত্র কয়েক ঘণ্টা সময় লাগবে। এমতাবস্থায় এই অল্প কয়েক ঘণ্টা মাহরাম ছাড়া সফর করতে কি কোনো প্রকার অসুবিধা আছে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
মহিলাদের জন্য মাহরাম পুরুষ ব্যতীত সফরসম দূরত্বে বের হওয়া জায়েয নয়। এছাড়া হাদিস শরিফে মহিলাদেরকে মাহরাম ব্যতীত হজ্বের সফরে যেতেও নিষেধ করা হয়েছে। রাসূলে কারীম (সা.) বলেন-
لاَ يَخْلُوَنّ رَجُلٌ بِامْرَأَةٍ، وَلاَ تُسَافِرَنّ امْرَأَةٌ إِلّا وَمَعَهَا مَحْرَمٌ، فَقَامَ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، اكْتُتِبْتُ فِي غَزْوَةِ كَذَا وَكَذَا، وَخَرَجَت امْرَأَتِي حَاجَّةً، قَالَ : اذْهَبْ فَحُجّ مَعَ امْرَأَتِكَ.
কোনো পুরুষ যেন অপর মহিলার সঙ্গে একাকী অবস্থান না করে। আর কোনো মহিলা যেন তার মাহরাম ব্যতীত সফর না করে। তখন এক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমি অমুক যুদ্ধে নাম লিখিয়েছি। আর আমার স্ত্রী হজ্বযাত্রী। তখন রাসূল (সা.) বললেন, তুমি তোমার স্ত্রীর সঙ্গে হজ্ব করতে যাও। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০০৬)
অপর এক হাদিসে এসেছে, রাসূলে কারীম (সা.) বলেন-
لَا تَحُجّنّ امْرَأَةٌ إِلّا وَمَعَهَا ذُو محْرمٍ.
কোনো মহিলা যেন মাহরাম ব্যতীত হজ্ব না করে। (সুনানে দারাকুতনী, হাদিস: ২৪৪০)
আর কয়েক ঘণ্টার সফর হলেও এটি হাজার হাজার মাইলের দূরত্ব। যেখানে আপনার স্ত্রীর সাথে কোনো মাহরাম থাকবে না। এছাড়া বর্তমান হজ্ব-আইন অনুযায়ীও কোনো মহিলা ভিসা পেতে হলে তার সাথে মাহরাম থাকা আবশ্যক। হজ্ব এজেন্সিগণ অনেক সময় ভুয়া মাহরাম দেখিয়ে থাকে। যা মিথ্যা ও প্রতারণার শামিল।
অতএব আপনার উচিত, দেশে এসে স্ত্রীকে নিয়ে হজ্বে যাওয়া অথবা এখান থেকে কোনো মাহরামের মাধ্যমে তার সৌদি পৌঁছার ব্যবস্থা করা।
-আলমাবসূত, সারাখসী ৪/১১০; তাবয়ীনুল হাকায়েক ২/২৩৯; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৩৮; রদ্দুল মুহতার ২/১২০; আত্তাজরীদ, কুদূরী ৪/২১৭০; আলকিফায়া শরহুল হেদায়া ২/২;
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم