প্রশ্ন
আল্লাহর রহমতে আমার গত বছর হজ্বে যাওয়ার সুযোগ হয়। ১২ই যিলহজ্ব মাগরীবের পর রাস্তায় এক বৃদ্ধের সাথে দেখা হয়। তিনি বললেন, বাবা, আমি রাস্তা হারিয়ে ফেলেছি। আমার বাসাটা একটু খুঁজে দেবে? তার বাসা খুঁজতে খুঁজতে আলাপচারিতায় জানতে পারলাম তিনি তখনও তাওয়াফে যিয়ারত করেননি। মিনা থেকে ১২ই যিলহজ্বের কংকর মারার পর কাফেলার সাথে মক্কার উদ্দেশ্যে বের হয়েছিলেন। কিন্তু ভিড়ে কাফেলা থেকে বিছিন্ন হয়ে যান। কাফেলাকে খুঁজে না পেয়ে শেষে একাই মাগরীবের সময় মক্কায় এসে পৌঁছান। আমি বললাম, ১২ই যিলহজ্ব সূর্যাস্তের আগে তাওয়াফ না করার কারণে আপনার উপর তো দম ওয়াজিব হয়ে গেছে। তিনি বললেন, আমি তো বিকালের আগেই তাওয়াফ করার জন্য বের হয়েছিলাম। কিন্তু পথ ও কাফেলা হারিয়ে ফেলায় দেরি হয়ে গেছে। এখন এশার সময়ই তাওয়াফ করে নিচ্ছি। তাহলেও কি আমার দম দিতে হবে?
আমি জানতে চাচ্ছি, এধরনের ক্ষেত্রেও কি দম ওয়াজিব হবে? কাফেলা খুঁজতে গিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে তাওয়াফে যিয়ারত না করতে পারলে যদি পরে করে নেওয়া হয় তাহলেও কি দম দিতে হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
তাওয়াফে যিয়ারাতের সময় ১০ই যিলহজ্ব সুবহে সাদিক থেকে ১২ই যিলহজ্বের সূর্যাস্ত পর্যন্ত। শরীয়তসম্মত ওজর ব্যতীত এসময়ের ভিতর তাওয়াফে যিয়ারত না করে পরে করলে জরিমানা হিসাবে দম ওয়াজিব হয়। তাই প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তির উপর দম ওয়াজিব হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, ‘পথ হারিয়ে যাওয়া’ এক্ষেত্রে ওজর হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তিনি তো আরো আগেই ঘর থেকে বের হতে পারতেন। তবে পথ হারিয়ে যাওয়ার কারণে বিলম্বের গুনাহ হবে না। তবে তাকে দম দিতে হবে। আর দম অর্থ এক বছর বয়সী ছাগল, ভেড়া বা দুম্বা জবাই করা কিংবা গরু, মহিষ বা উটের সাত ভাগের এক ভাগ দেওয়া। আর দমের পশু হেরেম এলাকাতেই জবাই করতে হবে।
-মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবাহ, বর্ণনা ১৩২২৭; আলমাবসূত, সারাখসী ৪/৪১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৬০৬; ফাতাওয়া খানিয়া ১/২৯৮; রদ্দুল মুহতার ১/৫০৭; খিযানাতুল ফিকহ পৃ. ৯৪; মানাসিকে মোল্লা আলী আলকারী পৃ. ৩৪৮, ৩৯৩; গুনয়াতুন নাসিক পৃ. ২৩৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم