#বিশ্ব_মা’_দিবস আজ।পৃথিবীতে মায়ের সন্তানাদি নাকি এতই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে যে, তাদের হাতে মায়ের সেবা করার মত ও মায়ের পাশে থাকার মত কোন সময় নেই। অবশ্য অন্য কিছুর জন্য তাদের যথেষ্ট সময় থাকে! তাই প্রয়োজন হয়েছে একটি দিবসের। কারণ বছরে ৩৬৫ দিনের মধ্যে একটি দিনও যদি মায়ের জন্য নির্দিষ্ট না করা যায় তো, লোকেরা কী বলবে?! জগত কী ভাববে?! মায়ের সম্মানের কী হবে?! জননীর ঋণ শোধ হবে কী ভাবে?অথচ ইসলামের বিধান হলো: ” গায়ের চামড়া দিয়ে মায়ের জুতা বানিয়ে দিলেও একফোটা দুধের বদলা হয়না”।”
মা যখন কাছে ছিলাম তখন ছোট ছিলাম, আদর যত্ন করেছ ভালবাসা দিয়ে বড় করেছ তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করেছ। কিন্তুু যখন আমার দায়িত্ব আসল তখন তোমাকে ছেড়ে আমি অনেক দুরে মা…………. আমি স্বার্থপর মা….. মা আমি স্বার্থপর….. ক্ষমা কর মা আমায়। আমি যখন মা বা বাবা তখন আমার মাকে ভূলতে বসেছি।আহ্! আফসোস”
..ছোট থেকে সবাই কতই না বকুনি খেয়েছি মায়ের কাছে। কখনো মনে হয়েছে “ধ্যাত, বাসা ছেড়েই চলে যাবো!” — আবার কখনো মনে হয়েছে মায়ের মত নিষ্ঠুর আর কেউ হতে পারে না! কিন্তু মা যেমন বকতে জানে সবার থেকে বেশি, ভালোবাসতেও জানে সবার থেকে অনেক অনেক বেশি।
বলো-وَاخْفِضْ لَهُمَا جَنَاحَ الذُّلِّ مِنَ الرَّحْمَةِ وَقُل رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا হে আমার মালিক! তাঁরা (অর্থাৎ পিতা মাতা) শৈশবে আমাকে যেভাবে স্নেহ-যতে লালন-পালন করেছেন, তুমিও তাঁদের প্রতি সেভাবে সদয় হও’। (সুরা-বনী ইসলাঈল-২৩-২৪) মহানবী মুহাম্মদ (সা.) বলেন-‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত’-(সুনান:সহীহ:৩২০২) তিনি আরো বলেন:
أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال: إنَّ اللّهَ حَرَّمَ عَلَيْكم عُقُوق الأمهات، المتفق عليه،
“নিশ্চয় আল্লাহ তাআলা পিতা-মাতার অবাধ্য তাকে চিরতরে হারাম করেছেন।”বুখারী মুসলিম
لاَ يَدْخُلُ الْجَنّةَ مَنّانٌ وَلاَ عَاقّ وَلاَ مُدْمِنُ خَمْرٍ.
“কোটা দানকারী পিতা মাতার অবাধ্য সন্তান এবং মদ পানকারীই কখনো জান্নাতে যাবে না।-আহমদ, নাসাঈ
قال: هما جنتك ونارك
. ”বাবা-মা তোমার জান্নাত-জাহান্নামের নিশ্চিত গ্রান্টি,,।(বুখারী ২/১৩৫)
★একদিন ৭ বছরের এক বালক তার আম্মুকে বললো, আম্মু! আমাকে আগামী বছর ঈদে কি দিবে???আম্মু বললেন, এখনো তো অনেক সময় আছে… দেখা যাক…ছেলেটি ঈদের কিছুদিন আগেই হটাৎ অজ্ঞান হয়ে গেলো।
দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলো। ডাক্তার ছেলেটিকে পরীক্ষা করে ছেলেটির মা ও বাবাকে বললো, আপনার ছেলের হার্টে একটি ছিদ্র ধরা পড়েছে।
দ্রুত হার্ট পরিবর্তন না করলে তাকে বাচাঁনো যাবে না।
যখন মা ছেলেটিকে দেখতে গেলো, ছেলেটি তার মাকে বললো, আম্মু!
আমি কি মারা যাবো???মা বললেন, না, তুমি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে উঠবে। ইনশাআল্লাহ।
আম্মু! তুমি কিভাবে জানো?
ডাক্তার আমাদেরকে বলেছে।আব্বু তুমি চিন্তা করনা। আমি জানি আব্বু, তুমি অবশ্যই সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। ছেলেটি দীর্ঘদিন হাসপাতালে চিকিৎসার পর ঈদের দিন সুস্থ হয়ে বাসায় আসলো। বাসায় আসার পরে, তার বাবা তাকে একটি চিঠি পড়তে দিলো। চিঠিটা ছেলের মায়ের লেখা।
#মায়ায় ভরা মা-একটি ঘটনা
★প্রিয় আব্বু আমার এই চিঠি! তুমি যখন পড়ছো, তার অর্থ হলো সব কিছু ভালো ভাবেই হয়েছে এবং তুমি সুস্থ আছো মহান আল্লাহ তায়ালার অপার মহিমায়, যেমনটি আমি বলেছিলাম।
মনে আছে বাছাধন?একদিন তুমি প্রশ্ন করেছিলে, আগামী ঈদে তোমাকে কি উপহার দিবো। তখন আমি জানতাম না কি দিবো। কিন্তু যখন তুমি অসুস্থ হয়ে পড়লে, তখনই আমি বুঝলাম তোমাকে আমি কি দিত পারি!কারণ ইতিপূর্বেও আমাকে একটি হার্ট কেটে ফেলতে হয়েছিল। দ্বিতীয়টি তোমাকে দান করেই আমি মহান আল্লাহ্ র কাছে আছি।
তাই তোমার জন্যে আমার উপহার, আমার একমাত্র হার্ট। আমি তোমাকে এর থেকে অনেক বেশি ভালোবাসি। আমার ছেলেটা বেচে আছে আমার জীবনের বিনিময়ে। তুমি মন ভরে ডাকো মা মা মা।
সন্তানের জন্য মায়ের ভালোবাসা আর আত্মত্যাগ কখনো কোনো বস্তুগত দ্রব্যের সাথে তুলনীয় না। একটি মা মাকড়সা যখন ডিম দেয় তখন সে ডিমগুলো অন্য প্রাণী খেয়ে ফেলার ভয়ে নিজের বুকের সাথে আঁকড়ে ধরে রাখে, একসময় ডিম ফুটে বাচ্চা বের হয় এবং বাচ্চারা মায়ের রক্ত মাংস খেয়ে খেয়ে বড় হয় অবশেষে মাকে খোসায় পরিণত করে। আমাদের মা ও আমাদের জন্য এত বেশি কষ্ট সহ্য করেন তা ওই মাকড়সার রক্ত খেয়ে বেঁচে ওঠা সন্তানদের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। সব সময় সন্তানের সংকট মানে মায়ের চোখে ঘুম নেই।!!!!
মা শব্দটি যেমন অতি প্রিয় শব্দ তেমনি যেন তা আমাদের কাজের মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়। কৃত্রিমতা নয়; ভালবাসতে হবে হৃদয়ের একান্ত গহীন থেকে। ভালবাসতে হবে একদিনে জন্য নয়: বরং প্রতিদিন ও সার্বক্ষণিক ভাবে। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমরা যেন পিতা মাতার খেদমত করে জান্নাত হাসিল করার সৌভাগ্য অর্জন করি।আমিন।
Dr. Khalilur Rahman Madani · toosepdrnSt1482234h 2,tf09204aMa1h7c6f2m0agt12iuuy9ic l0mc7f ·
==========================================
আহারে! আরেক নরপশু ও তার বউ মিলে তার জন্মদাত্রী মাকে বাসে তুলে দিয়ে বলল যাও যতদূর চোখ যায় সেখানে চলে যাও! ওই নরপশু, কান্ডজ্ঞানহীন সন্তান ও তার বউ যে অমার্জনীয় মহা অপরাধ করেছে এর বিনিময়ে দুনিয়া ও আখেরাতের তাদের জন্য রয়েছে চরম চরম জঘন্য পরিণতি ও কঠিন শাস্তি। বিস্তারিত কমেন্টসে।https://www.news24bd.tv/details/141197
Ribeng Bhante · collected
Follow
HAPPY MOTHER’S DAY
…
১৪/০৫/২০২৩ইং,
মে মাসে ২য় রোববার।
আজ মে মাসে দ্বিতীয় রোববার হচ্ছে বিশ্ব #মা দিবস। মা দিবসে প্রত্যেক মাকে অজস্র শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা। সুন্দর এই পৃথিবীতে সবচেয়ে শ্রুতিমধুর ও পবিত্র শব্দের নাম ‘#মা’। এক অক্ষরের একটি ছোট্ট শব্দ ‘মা’। সন্তানের সাথে যার নাড়ির সম্পর্ক। হৃদয়স্পর্শী এ শব্দের সঙ্গে অন্য কোন শব্দের তুলনা হয় না। মা শব্দটি দিয়েই প্রত্যেক শিশুর জীবন আরম্ভ হয়। মানব শিশু মায়ের কারণেই সুশীতল ধরাতলের সুন্দর মুখখানি দেখতে পায়।
স্নেহময়ী মায়ের হাসি, মন উজাড় করা ভালোবাসা, আদর-স্নেহে সন্তানের মনে বয়ে যায় অনাবিল আনন্দের ঝরনাধারা। সব দু:খ-কষ্ট আর বেদনা ‘মা’ শব্দের মাঝে বিলীন হয়ে যায়। যুগে যুগে মাকে নিয়ে রচিত হয়েছে অনেক গল্প, গান, ছড়া, কবিতা। মমতাময়ী মাকে নিয়ে কবি কাদের নেওয়াজ তাঁর ‘মা কবিতায় লিখেছেন-
‘মা’ কথাটি ছোট্ট অতি কিন্তু যেন ভাই,
ইহার চেয়ে নাম যে মধুর ত্রিভুবনে নাই।’
মাকে নিয়ে কবির একথা চিরসত্য হয়ে আমাদের কাছে প্রতি মূহুর্তে উপলব্দি হয়। সত্যিই মায়ের মতো আপনজন এ পৃথিবীতে আর কেউ নেই। মা করুণাময়ী ও স্নেহের খনি। মায়ের ভালোবাসার ন্যায় অকৃত্রিম ভালোবাসা ও স্নেহ পৃথিবীতে দুর্লভ। মায়ের স্নেহ-মমতা যে কী অসীম তা কল্পনাতীত। মায়ের ভালোবাসা স্বর্গীয় ও স্বত:স্ফূর্ত। জগতের আর কারো কাছ থেকে এই নি:স্বার্থ ও পবিত্র ভালোবাসা আশা করা যায় না। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর এই নিঃস্বার্থ ভালোবাসা চলতে থাকে। মানব জীবনে মায়ের স্থান তাই অনেক ঊর্ধে, সর্বাধিক সম্মানের ও শ্রদ্ধার পাত্র। সন্তানের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয় হচ্ছে মা। বস্তুত: মা একজন সন্তানের অধিক মর্যাদাবান ও শ্রদ্ধাভাজন ব্যক্তি। এই সুন্দর বিশ্বচরাচরে সন্তানের জন্য মায়ের মতো আপনজন আর কেউ নেই। এজন্য মহাকারুণিক ভগবান গৌতম বুদ্ধ “করণীয় মৈত্রী সূত্রে” বলেছেন —-
” মাতা যথা নিযং পুত্তং আযুসা একপুত্তমনুরক্খে,
এবম্পি সব্বভূতেসু, মানসং ভাবযে অপরিমাণং।”
মা সর্বাবস্থায় সন্তানের মঙ্গল কামনা করেন। মানব সন্তান সবচেয়ে অসহায় অবস্থায় জন্মগ্রহণ করে। মা তখন তার আপত্য মায়া-মমতা ও স্নেহ-যত্নে নিজের বুকের রক্তকে দুধের পরিনত করে তা দিয়ে লালন-পালন করে তিলে তিলে বড় করে তোলেন অসহায় সন্তানকে।
সন্তানের ভালোর জন্য মায়ের চিন্তা সারাক্ষণ। সন্তানের কোন অসুখ হলে মা দুর্ভাবনায় অস্থির হয়ে পড়েন। অসুস্থ সন্তানের শিয়রে বসে মা বিনিদ্রায় রাত যাপন করেন। ক্ষুধা-ক্লান্তি ভুলে গিয়ে সন্তানের সুস্থতার জন্য সেবা-শুশ্রুষা করে থাকেন। অনেক সময় নিজে না খেয়ে সন্তানের মুখে খাবার তুলে দেন। সন্তানের সুখের জন্য মা নিজের দু:খ কষ্টকে আড়াল করে রাখেন। পৃথিবীর সব মায়ের কাছেই তার সন্তান সাত রাজার ধন।
নিজের জীবন দিয়ে হলেও মা সন্তানের সুখ-শান্তি ও মঙ্গল কামনা করেন। সন্তানের সফলতায় মা আনন্দিত হয়। মায়ের এই আনন্দ স্বর্গীয়। মায়ের স্নেহের তুলনা নেই। মায়ের স্নেহ-মমতা ও আশীর্বাদ ছাড়া জগতে কেউ উন্নতি লাভ করতে পারেনা। ইউরোপ বিজয়ী বীর সম্রাট ‘নেপোলিয়ন বোনাপার্ট’ তার মা লেটিসিয়াকে দেখেছেন বুদ্ধি, আত্মমর্যাদা বোধ, ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে ১৩ সন্তানকে লালন-পালন করতে। তাই তো তিনি বলেছিলেন—
‘আমাকে একটি ভালো মা দাও, আমি তোমাদের একটি ভালো জাতি উপহার দেব।’
মায়ের প্রতি সন্তানের অনেক দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে। মায়ের প্রতি সন্তানের কর্তব্য যে কত বড় তা ভেবে শেষ করা যায় না। সারাজীবন তাঁর সেবা করলেও সে ঋণ শোধ হবার নয়। মা শ্রদ্ধার আধার। স্নেহের কান্ডারি। সব ধর্মেই মা আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই সন্তানের সর্ব প্রথম দায়িত্ব হচ্ছে মাকে শ্রদ্ধা করা এবং অন্তরের শ্রেষ্ঠতম আসনে তাঁকে প্রতিষ্ঠা করা। সন্তানের হৃদয়োৎসারিত ভক্তি ও শ্রদ্ধায় মাকে অভিষিক্ত করা।
সন্তানের কাছে মা-ই হলেন জগতের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তি। তাই মায়ের সাথে সর্বদা সম্মানজনক ও সহযোগিতামূলক ব্যবহার করতে হবে। তাঁর সঙ্গে কখনও কর্কশ ভাষায় কথা বলা উচিত নয়। মায়ের অবাধ্যতা অমার্জনীয় অপরাধ। মায়ের আদেশ পালন করা এবং তাঁর নির্দেশ মেনে চলা সন্তানের পবিত্র কর্তব্য। মায়ের সন্তুষ্টির দিকে সর্বদা খেয়াল রাখতে হবে। কারণ, মায়ের সন্তুষ্টি লাভের মধ্যে সন্তানের জীবনের সাফল্য নির্ভর করে। সাধ্যমত তাকে পর্যাপ্ত পুষ্টিকর খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী দিয়ে সেবা করা উচিত। এছাড়া মা কোন কারণে অসুস্থ হয়ে পড়লে যত্ন সহকারে তাঁর সেবা-শুশ্রুষা করা সন্তানের একান্ত কর্তব্য। বৃদ্ধ বয়সে তিনি যাতে নিরাশ্রয় ও অসহায় অবস্থায় পতিত না হন, এজন্য বৃদ্ধ বয়সে মায়ের যথাযথ সেবা-যত্ন ও তত্ত্বাবধান করা ছেলে-মেয়েদের অন্যতম দায়িত্ব। তাছাড়া বৃদ্ধ বয়সে মায়ের ভরণ-পোষণের দায়িত্বও সন্তানের পালন করতে হবে এবং তার যাবতীয় সেবা-যত্ন, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, বিশ্রাম ও বিনোদনের সুব্যবস্থা করা উচিত। মোটকথা মাকে অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদান, আচার ব্যবহারে সন্তুষ্ট রাখা এবং তাঁর সেবা-শুশ্রুষায় এগিয়ে আসা সন্তানের কর্তব্য।
পিতার চেয়েও মা বেশি মর্যাদার অধিকারী। এ অধিকার আস্থার, অর্থনৈতিক মর্যাদা ও সম্মান নিয়ে বেঁচে থাকার; ভক্তি, বিনীত আচরণ ও ভালোবাসা পাওয়ার। কথাই বলেনা ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত।’ এ পৃথিবীতে যারা অসাধারণ প্রতিষ্ঠা লাভ করেছেন তারা প্রত্যেকেই আন্তরিকতার সঙ্গেঁ মায়ের প্রতি কর্তব্য পালন করেছেন। কাজেই জীবনের সর্বাবস্থায় মায়ের আদেশ-নিষেধ মান্য করা ও তার আনুগত্য করা সন্তানের জন্য অপরিহার্য কর্তব্য। সন্তানের কখনো মায়ের অবাধ্য হওয়া উচিত নয়। অবাধ্য সন্তান মায়ের কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অপরদিকে কৃতি সন্তান মায়ের কাছে মাথার মুকুট সমান।
মায়ের অনুগত থাকলে এবং যথাযথরূপে তাঁরা সেবা-যত্ন করলে ছেলে-মেয়েদের জীবনে সাফল্য আসে। সমাজে তাঁর মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং মৃত্যুর পর স্বর্গে প্রবেশের পথ সুগম হয়। একটি কথা প্রচলিত আছে-“জননী জন্মভূমি স্বর্গাদপি গরিয়সী।” অর্থাৎ জননী স্বর্গের চেয়েও শ্রেষ্ঠ। ইহকাল ও পরকালে স্বর্গীয় শান্তি লাভের জন্যে সন্তানকে মায়ের প্রতি দায়িত্ব পালনে সদা তৎপর হতে হবে। কাজেই তাঁর সন্তুষ্টির জন্য সন্তানকে সবকিছুই করতে হবে।
সন্তানের জন্য সেরা উপহার হলো #মা। রাজার রাজমহলের চেয়েও ‘মা’ অনেক দামি। মায়ের নিকট সন্তান যেমন আপন প্রাণের চেয়েও প্রিয়, সন্তানের নিকটও মা তেমনি সর্বশ্রেষ্ঠ ধন। মায়ের মৃত্যু হলে সেই শুন্যস্থান কারো দ্বারাই পূরণীয় নয়। কিন্তু অনেক নির্বোধ সন্তান মায়ের গুরুত্ব বোঝে না। তাই বেঁচে থাকতে তারা মায়ের প্রতি কর্তব্য পালন করে না। তাদের সম্পর্কে ধর্মীয় গ্রন্থে বলা হয়েছে-‘যারা বেঁচে থাকতে বাবা-মায়ের সন্তুষ্টি বিধান করে না, জগতে তারাই সবচেয়ে দুর্ভাগা।’
যে সন্তান মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও দায়িত্ববান, সে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে। তাই মাকে স্মরণ করে জগদ্বিখ্যাত মনীষী আব্রাহাম লিংকন বলেছিলেন-
‘আমি যা কিছু পেয়েছি, যা কিছু হয়েছি অথবা যা হতে আশা করি তার জন্য আমি আমার মায়ের কাছে ঋণী।’
কাজেই মায়ের কথা মেনে চলা এবং তার প্রতি কর্তব্য পালন করা আমাদের জীবনে প্রতিষ্ঠা লাভের সোপানও বটে। মায়ের ভালোবাসার বিকল্প কিছু হয় না। মায়ের ঋণ সন্তান কখনও শোধ করতে পারেনা। এযেন অতল করুণার সাগর, যার কূল নেই, কিনারা নেই। তাই আমাদের প্রত্যেকের মাকে ভালোবাসা উচিত, যেমন ভালোবাসা দিয়ে তারা আমাদের মানুষ করেছেন।
কিন্তু! আজকের নতুন প্রজন্ম বাবা-মায়ের গুরুত্ব বোঝে না, অনেকে বুঝতেও চায় না। তারা মা-বাবার পরম স্নেহ ও যত্নে বড় হয়ে যখন নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে স্বাবলম্বী হয়, তখন তারা বাবা-মাকেই বোঝা মনে করতে শুরু করে। নিজেদের কাছ থেকে বাবা-মাকে দূরে সরাতে থাকে। সন্তানের কাছে বৃদ্ধ বাবা-মা হয়ে যান আগের যুগের, বেমানান। শেষবয়সী বাবা-মাকে তারা রেখে আসে বৃদ্ধাশ্রমে। ইদানিং আমাদের দেশের শহরের তথাকর্থিত আধুনিক শিক্ষিত মানুষদের মধ্যে এরকম কালচার শুরু হয়েছে। এটা খুব দু:খজনক এবং অন্যায়। সব সন্তানকেই মায়ের প্রতি যত্নবান হওয়া উচিত। যদি ফকির আলমগীরের সেই গানের ভাষায় বলি—
‘মায়ের এক ধার দুধের দাম,
কাটিয়া গায়ের চাম;
পাপোস বানাইলেও ঋণের শোধ হবে না।’
মায়ের দুধের ঋণ কোনো কিছুর বিনিময়েই শোধ করা সম্ভব নয়। তাই কোনো কারণে, কোনভাবেই মায়ের মনে কষ্ট দেয়া উচিত নয়।
তবে মাকে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানানোর নির্দিষ্ট কোন দিন নেই। মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রতিটি মূহুর্তের। তারপরও বিশ্বের সকল মানুষ যাতে একসাথে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পরে সে জন্য এখন প্রতি বছর আন্তর্জাতিক ‘মা দিবস’ পালন করা হয়। বেশিরভাগ দেশই #মে_মাসের_দ্বিতীয় #রোববার এই ‘মা দিবস’ উদযাপন করে থাকে। মায়ের প্রতি অধিক শ্রদ্ধা, সমাজে মায়ের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা, ভালোবাসা ও বিশেষ সম্মান জানানো এবং নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করার জন্যই ‘বিশ্ব মা দিবসের’ আয়োজন করা হয়। শুধু মা দিবস কেন প্রতিক্ষণে প্রতিমুহূর্তে ‘মা’ যেন আমাদের হৃদয় থাকে ‘মা দিবসে’ এটিই হোক আমাদের অঙ্গীকার।
‘মা দিবস’ পালনের ইতিহাস বেশ প্রাচীন। এ দিবসটির উদ্যোক্তা হচ্ছেন মার্কিন স্কুল শিক্ষিকা #এ্যানা_জার্ভিস। তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন আন্তর্জাতিক মা দিবসের জন্য। তিনিই প্রথম মায়েদের সম্মানে একটি বিশেষ দিনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন বিভিন্ন লেখা ও বক্তৃতায়। মার্কিন মুলুকের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়াতে ১৮৬৪ সালের ১ মে জার্ভিস জন্ম গ্রহণ করেন। তার মায়ের নাম এ্যানা মারিয়া রেভিস জার্ভিস। ১৯০৫ সালের ১২ মে রেভিস জার্ভিস মারা যান। মায়ের মৃত্যু এ্যানাকে বিমূর্ষ করে তোলে এবং মায়ের মৃত্যুর পর এ্যানা আর স্বাভাবিক হতে পারেন নি। ১৯০৭ সালের ১২মে মায়ের মৃত্যুর দু’বছর পর, তিনি প্রথমবার ‘মায়ের জন্য ভালোবাসা’-শিরোনামে ‘#মা_দিবস‘ উদপযাপন করেন। তবে তখনো এদিবস নিয়ে মানুষের মধ্যে কোনো সচেতনতা বা আবেদন ছিল না। ফলে জার্ভিস লেখালেখি শুরু করেন এবং বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এ বিষয়টি নিয়ে বক্তৃতা করেন। তার বক্তব্যে মুগ্ধ হয়ে জন ওয়েনম্যাকার নামে এক সমাজসেবকও একাজের সঙ্গেঁ নিজেকে সম্পৃক্ত করেন। দীর্ঘ সময় বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা পর্যালোচনা হয়, নানা রকম প্রতিবন্ধকতাও আসে; কিন্তু এ্যানা জার্ভিস পিছপা হননি। অবশেষে ১৯১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্টের ২৮তম প্রেসিডেন্ট #উড্র_উইলসনের স্বাক্ষরক্রমে ‘মা দিবস’ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। তবে দিবসটি উদযাপনের সূত্রপাত বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম হওয়ায় একই সময়ে তা উপযাপিত হয় না। বেশির ভাগ দেশে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার দিনটি উপযাপন করা হয়।
গবেষকদের মতে, সমাজের খুব গভীরে লুকিয়ে থাকা সীমাহীন অপ্রাপ্তি ও অমর্যাদার দেয়াল ভেদ করে এ দেশের মায়েরা সন্তানের সফল এবং প্রতিষ্ঠিত করার ব্রত নিয়ে আমরণ ত্যাগ স্বীকার করে যান। অর্থ আর স্বার্থের উর্ধে থেকে যায় চিরদিন সে মাতৃত্ব। ‘মা দিবস’ মায়েদের আরো সচেতন করে আদর্শ মা হওয়ার অনুপ্রেরণা জোগাবে এবং মাতৃত্বসুলভ উন্নত মননশীলতার জন্ম দেবে; যার পরোক্ষ ফল হিসেবে দেশ ও জাতি উপকৃত হবে এবং আগামী প্রজন্ম পাবে একটি সুখী, সুন্দর ও সমৃদ্ধশীল বাংলাদেশ, তথা বিশ্বময়।
তাই সন্তানের গোটা জীবনই মায়ের প্রতি অশেষ শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের সময়, এমনকি মা-বাবার মৃত্যুর পরেও সন্তানের এ দায়িত্ব কখনো শেষ হয় না। মানব সন্তানেরা মায়ের ত্যাগ-তিতিক্ষার কথা বেমালুম ভুলে যায় বলেই বিশ্বজুড়ে গৃহে বা বৃদ্ধাশ্রমে অসহায় মায়ের প্রতি বঞ্চনা, অবহেলা আর অবজ্ঞার বার্তা শোনা যায়। তাই আদর্শ পরিবারের সন্তান-সন্ততির অবশ্য কর্তব্য সব সময়ই মা-বাবার প্রতি আন্তরিকভাবে শ্রদ্ধাশীল হওয়া, তাঁদের মান্যগন্য করা, তাদের সঙ্গে নম্র ও সদয় আচরণ করা এবং তাদের প্রতি চিরকাল কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। এই কারণে বলে……
আমার ১ম আশ্রয় মায়ের জঠরে ,,
আমার ১ম রেস্তরা মায়ের স্তন,,
আমার ১ম টয়লেট মায়ের কোল,,
আমার ১ম দেখা দৃশ্য মায়ের মুখ,,
আমার ১ম বিছানা মায়ের কোল,,
আমার ১ম রুপকার আমার মা,,
আমার ১ম স্কুলে শিক্ষা মায়ের মুখের ভাষা,,
আমার ১ম শিক্ষক আমার মা,,
আমার ১ম ডাক্তার আমার মা,,
আমার ১ম বন্ধু আমার মা,,
আমার ১ম যান মায়ের পিঠ,,
আমার ১ম উকিল আমার মা,,
আমার ১ম শুভাকাঙ্খি আমার মা,,
আমার ১ম চুম্বনকারী আমার মা,,
আমার ১ম ভালোবাসা আমার মা,,
আমার ১ম শাসনকর্তা আমার মা,,
আমার ১ম ভাষাদাত্রী আমার মা,,
আমার ১ম অস্ত্র মায়ের স্নেহ,,,
আমার ১ম ও শেষ আশ্রয়আমার মা।
“মা”এজন্যে তোমাকে অশেষ অশেষ অশেষ কৃতজ্ঞতা জানায় আমাকে এতো কিছু উপহার দেওয়ার জন্য।
তাই এই পৃথিবীর সকল ছেলে-মেয়ের ‘মা’ যেন সন্তানের অপার স্নেহে আজীবন অনাবিল হাসি-আনন্দে, সুখে-শান্তিতে, নিরাপদে থেকে সুস্থ্য-নিরোগ ও সুদীর্ঘায়ু হোক প্রার্থনা ও কামনা করি…