প্রশ্ন
কয়েকজন মুসাফির মিলে আসরের নামায জামাতের সাথে আদায় করছিল। এক রাকাত হয়ে গেছে আর এক রাকাত বাকি। ইতিমধ্যে একজন মুসাফির এসে নামাযে শরীক হল। এখন কথা হল এই মুসাফির তো জানে না যে, ইমাম মুসাফির না মুকিম। এখন জানার বিষয় হলো, এই মুসাফির মুসল্লি কত রাকাত নামায পড়বে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
ইমাম মুকীম না মুসাফির এ ব্যাপারে সন্দেহ হলে জামাতে শরীক হওয়ার পূর্বেই তা জেনে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবে এবং ইমামেরও উচিত যদি তিনি মুসাফির হন তাহলে কসর নামাযের ক্ষেত্রে নামায শেষে সালাম ফেরানোর পর মুসল্লীদেরকে জানিয়ে দেওয়া যে, তিনি মুসাফির, তাই নামায কসর পড়া হয়েছে। সুতরাং কোনো মুকীম মুসল্লী থাকলে তারা যেন নামায পূর্ণ করে নেয়।
এক বর্ণনায় এসেছে, ওমর (রা.) যখন মক্কায় এসে নামাযের ইমামতি করতেন তখন চার রাকাত বিশিষ্ট নামায দু’রাকাত পড়তেন এবং নামায শেষে বলতেন-
يَا أَهْلَ مَكّةَ أَتِمّوا صَلاَتَكُمْ، فَإِنّا قَوْمٌ سَفْرٌ.
‘আমরা মুসাফির (তাই নামায কসর করেছি) সুতরাং তোমরা যারা মক্কার অধিবাসী নামায পূর্ণ করে নাও।’ (মুআত্তা মালেক, বর্ণনা: ৫০৪)
কিন্তু কখনো যদি এমন হয় যে, মুক্তাদী কোনোভাবে বুঝতে পারছে না যে, ইমাম মুকীম না মুসাফির তাহলে সেক্ষেত্রে নিয়ম হল, মুক্তাদী মুকীম হোক বা মুসাফির; ইমামকে মুকীম ধরে নামায পূর্ণ করবে।
অতএব, প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে ঐ মুসাফির যদি ইমামের অবস্থা না জানতে পারে এবং ইমাম নিজেও সালামের পর কোনো ঘোষণা না দেন তবে তিনি ইমামের সালামের পর আসরের তিন রাকাত আদায় করে নামায পূর্ণ করবেন। তবে এক্ষেত্রে যদি চার রাকাত পূর্ণ না করে দুই রাকাতেই সালাম ফিরিয়ে দেয় আর পরে জানা যায় যে ইমাম মুসাফির ছিল তাহলে নামায আদায় হয়ে যাবে। কিন্তু ইমাম যদি মুকীম হয়, আর মুক্তাদী দুই রাকাত পড়ে সালাম ফিরিয়ে দেয় তাহলে তার নামায ফাসেদ হয়ে যাবে। এবং তাকে ঐ নামায পুনরায় আদায় করতে হবে। আর সে যেহেতু মুসাফির তাই একাকী পড়লে দুই রাকাত পড়বে।
-আলমাবসূত, সারাখসী ২/১১০; আলবাহরুর রায়েক ২/২৩৮; রদ্দুল মহতার ২/১৩৭
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم