প্রশ্ন
বাড়ি-ঘর, মসজিদ-মাদরাসার ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কুরআনের আয়াত ও হাদিস লিখিত ওয়ালমেট, ক্যালেন্ডার, শোপিছ ও বিভিন্ন আসবাবপত্র আমরা ব্যবহার করে থাকি। এগুলোর কোনোটির মধ্যে সরাসরি আরবী লেখা থাকে, কোনোটির মধ্যে তরজমা, কোনোটির মধ্যে কেলিওগ্রাফির মাধ্যমে আয়াত বা হাদিস লেখা থাকে। আমার প্রশ্ন হল, এগুলো ব্যবহার কি জায়েয, না নাজায়েয? এগুলোর হুকুম কী? এ ধরনের ক্যালেন্ডার দিয়ে দরসি গায়রে দরসি কিতাব বাঁধাই করা, পড়ার টেবিলে বিছিয়ে ব্যবহার করা এবং বিভিন্ন স্থানে সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে লাগানোর হুকুম কী?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
কুরআন মাজীদ আল্লাহ তাআলার কালাম। এটি প্রদর্শনের বস্তু নয়। তাই শুধু প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে কুরআন-হাদিস লিখিত বা ক্যালিওগ্রাফি করা ওয়ালমেট বা শোপিছ ব্যবহার করা উচিত নয়। তবে কেউ যদি এ উদ্দেশ্যে এগুলো ব্যবহার করে যে, এর দ্বারা আল্লাহ তাআলার কথা স্মরণ হবে, এতে লিখিত বাণীর হেদায়েত ও শিক্ষা গ্রহণ করা যাবে তাহলে শর্ত সাপেক্ষে তা করা যেতে পারে। সে শর্তগুলো হল, আয়াত ও হাদিসের মর্যাদার প্রতি খেয়াল রাখা, যেন তা নিচে পড়ে না যায় বা নাপাক কিছুর সাথে স্পর্শ না হয়, আর ধুলাবালি থেকে নিয়মিত পরিচ্ছন্ন রাখা হয়।
কুরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডারের ক্ষেত্রেও একই বিধান। কুরআন-হাদিসের মর্যাদার প্রতি লক্ষ রাখতে হবে। বাতাসে যাতে উড়াউড়ি না করে সে ব্যবস্থাও করতে হবে। তবে ক্যালেন্ডারে কুরআনের আয়াত বা হাদিস না লেখাই উচিত; কারণ মানুষ এটিকে সেভাবে মর্যাদা দিয়ে ব্যবহার করে না এবং মাস ও বছর শেষে তা হেফাযত করে না; যেখানে সেখানে তা ফেলে দেয়।
কুরআন-হাদিস লিখিত ক্যালেন্ডার দ্বারা কিতাব বা বই-পুস্তক বাঁধাই করা মাকরূহ। এটা কুরআন-হাদিসের মর্যাদা পরিপন্থী। এ ধরনের ক্যালেন্ডার প্রয়োজন শেষে হেফাজত করতে হবে। যদি তা সম্ভব না হয় তাহলে পুড়িয়ে ছাইগুলো কোনো পবিত্র স্থানে দাফন করে দিবে।
-ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১০৯, ৫/৩২২; লবাহরুর রায়েক ২/৩৭; ফাতাওয়া খানিয়া ৩/৪২৪; আফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৮/৬৭, ৬৯; আদ্দুররুল মুখতার ৪/১৩০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم