প্রশ্ন
আমাদের এলাকার মসজিদে একদল লোক মিলাদ-কিয়াম করে। আরেকদল লোক তাদের এই কাজকে শরিয়ত বিরোধী আখ্যা দিয়ে তাদের বিরোধিতা করে। এমনকি এই ঘটনা হাতাহাতির পর্যায়ে চলে গিয়েছে। এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে শরিয়তের সঠিক সমাধান জানিয়ে আমাদেরকে বাধিত করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
মিলাদ শব্দের অর্থ হচ্ছে- রাসূল (সা.) এর জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করা। রাসূল (সা.) এর জন্ম বৃত্তান্ত নিয়ে আলোচনা করা নিঃসন্দেহে একটি সাওয়াবের কাজ।
কিন্তু বর্তমান সমাজে প্রচলিত যে মিলাদ-কিয়াম রয়েছে তা বিদআত ও শরিয়ত বিরোধী কাজ। কারণ, রাসূল (সা.) এর যুগ, সাহাবিদের যুগ, তাবেয়িন ও তাবে-তাবেয়িনের যুগ অর্থাৎ খাইরুল কুরূনে এর কোননোঅস্তিত্ব ছিল না।
যদি মিলাদ-কিয়াম পুণ্যের কাজ হত তাহলে অবশ্যই খাইরুল কুরূনে বা কুরআন-হাদিসে এর সপক্ষে প্রমাণ বিদ্যমান থাকত। বরং, ৬০৪ হিজরিতে আবু সাইদ মুজাফফর নামক ইরাকের এক বিলাসপ্রিয় ও ধর্মদ্রোহী জনৈক বাদশাহ এবং তার দরবারি আলেম আবু খাত্তাব উমর ইবনে দিহইয়া এর প্রচলন করে।
তাই এটি একটি সুস্পষ্ট বিদআত। এর আয়োজন করা ও এতে অংশগ্রহণ করা উভয়টাই নাজায়েয।
রাসূল (সা.) বলেছেন-
مَنْ أَحْدَثَ فِي أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ
‘যে আমাদের দ্বীনের মধ্যে এমন কিছু প্রবর্তন করে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা প্রত্যাখ্যাত।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৬৯৭; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৭১৮]
অন্যত্র তিনি বলেছেন-
فَعَلَيْكُمْ بِسُنَّتِي وَسُنَّةِ الْخُلَفَاءِ الرَّاشِدِينَ الْمَهْدِيِّينَ تَمَسَّكُوا بِهَا وَعَضُّوا عَلَيْهَا بِالنَّوَاجِذِ وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الْأُمُورِ فَإِنَّ كُلَّ بِدْعَةٍ ضَلَالَةٌ
‘তোমাদের জন্য আবশ্যক আমার ও আমার পরবর্তী হেদায়াতপ্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশেদার সুন্নাতকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরা যেভাবে দাঁত দিয়ে কোনো জিনিস দৃঢ়ভাবে কামড়ে ধরা হয়। আর শরিয়তে নিত্য নতুন জিনিস আবিষ্কার করা হতে বেঁচে থাক। কেননা সকল নবসৃষ্ট বস্তুই বিদআত। আর প্রত্যেক বিদআতই গোমরাহী।’ [আবু দাউদ, হাদিস: ৪৬০৭]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم