প্রশ্ন
গত রমযানে আমরা একটি দাওয়াতী সফরে চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে যাই। বৌদ্ধ-পাড়ায় দাওয়াতের কাজ করি। আলহামদুলিল্লাহ ইসলামের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে এক ভাই বারতম রমযানে সকাল নয়টার দিকে স্বেচ্ছায় ইসলাম গ্রহণ করে। সে যেহেতু নতুন তাই তাকে সেদিন পানাহার থেকে বিরত থাকতে বলিনি; বরং পরবর্তী দিন থেকে সে নিয়মিত রোযা রাখে। তার ইসলাম গ্রহণের দিন এবং পূর্বে অতিবাহিত হওয়া এগারো দিনের রোযা কাযা করা-না করা নিয়ে আমাদের মাঝে মতের ভিন্নতা দেখা দেয়। কেউ বলে, রমযান হল নামাযের মত। তাই এক রমযান পাওয়া পুরো রমযান পাওয়ার হুকুমে। ফলে বিগত এগারো দিনের কাযা করতে হবে। আবার কেউ ভিন্ন কথাও বলেন। তো প্রশ্ন হল-
এক. যেদিন কেউ ইসলাম গ্রহণ করল, সেদিন কি সে পানাহার থেকে বিরত থাকবে? যদি এমন ক্ষেত্রে পানাহার করে ফেলে তাহলে কী পরবর্তীতে তা কাযা করতে হবে? এক্ষেত্রে শরীয়তের বিধানটি জানালে কৃতজ্ঞ হব।
দুই. রমযানের কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে বিগত দিনের রোযা কাযা করার ব্যাপারে সঠিক মাসআলাটি কী?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
এক. কেউ যদি রমযানের দিনে ইসলাম গ্রহণ করে তবে তার জন্য ঐ দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত রোযাদারের মত পানাহার থেকে বিরত থাকা ওয়াজিব।
সুফিয়ান সাওরী (রাহ.) বলেন-
إِذَا أَسْلَمَ فِي شَهْرِ رَمَضَانَ لَمْ يَصُمْ يَوْمَهُ الّذِي أَسْلَمَ فِيهِ، وَلكِنْ يُؤْمَرُ أَنْ لَا يَأْكُلَ حَتّى يُمْسِي.
কেউ যদি রমযানের দিনে ইসলাম গ্রহণ করে তাহলে সেদিন সে রোযা রাখবে না। তবে ঐ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত পানাহার থেকে বিরত থাকবে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা: ৭৩৬৩)
কিন্তু কেউ সেদিন পানাহার করে ফেললে তাকে ঐ দিনের রোযা কাযা করতে হবে না। তবে ইসতিগফার করতে হবে।
দুই. আর রমযানের রাতে কেউ ইসলাম গ্রহণ করলে পরবর্তী দিন থেকেই রোযা রাখতে হবে। সর্বক্ষেত্রে ইসলাম গ্রহণের পর থেকেই রোযা রাখতে হবে। পূর্বের দিনগুলোর রোযা রাখতে হবে না।
-আলমুজামুল কাবীর তাবারানী, হাদীস ৬৪০১; বাদায়েউস সানায়ে ২/২৬১; কিতাবুল আছল ২/১৫৬, ১৬৬; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১৪; খিযানাতুল আকমাল ১/৩০০; ইমদাদুল ফাত্তাহ পৃ. ৬৯৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم