প্রশ্ন
আমার পিতা মারা গিয়েছেন বছর খানেক হয়েছে। কিন্তু এখনো তাকে ভুলতে পারি না। তার কথা প্রচুর মনে পড়ে। মনে পড়লে মন খারাপ হয়ে যায়। জানতে চাচ্ছি, এটা কি ধৈর্য্যের পরিপন্থী?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
না, এটা সবরের পরিপন্থী নয়। এটি কেবলমাত্র অভ্যন্তরীণ অনুভূতি। যা শরিয়তের দৃষ্টিতে বৈধ। হাদিস শরিফে এসেছে,
أُسَامَةُ بْنُ زَيْدٍ رضي الله عنهما قَالَ: «أَرْسَلَتِ ابْنَةُ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم إِلَيْهِ: إِنَّ ابْنًا لِي قُبِضَ فَأْتِنَا، فَأَرْسَلَ يُقْرِئُ السَّلَامَ، وَيَقُولُ: إِنَّ لِلهِ مَا أَخَذَ وَلَهُ مَا أَعْطَى، وَكُلٌّ عِنْدَهُ بِأَجَلٍ مُسَمًّى، فَلْتَصْبِرْ وَلْتَحْتَسِبْ. فَأَرْسَلَتْ إِلَيْهِ تُقْسِمُ عَلَيْهِ لَيَأْتِيَنَّهَا، فَقَامَ وَمَعَهُ سَعْدُ بْنُ عُبَادَةَ، وَمُعَاذُ بْنُ جَبَلٍ، وَأُبَيُّ بْنُ كَعْبٍ، وَزَيْدُ بْنُ ثَابِتٍ، وَرِجَالٌ، فَرُفِعَ إِلَى رَسُولِ اللهِ صلى الله عليه وسلم الصَّبِيُّ وَنَفْسُهُ تَتَقَعْقَعُ، قَالَ: حَسِبْتُهُ أَنَّهُ قَالَ: كَأَنَّهَا شَنٌّ، فَفَاضَتْ عَيْنَاهُ، فَقَالَ سَعْدٌ: يَا رَسُولَ اللهِ، مَا هَذَا؟ فَقَالَ: هَذِهِ رَحْمَةٌ جَعَلَهَا اللهُ فِي قُلُوبِ عِبَادِهِ، وَإِنَّمَا يَرْحَمُ اللهُ مِنْ عِبَادِهِ الرُّحَمَاءَُ
‘উসামা ইবনে যায়েদ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) -এর জনৈকা কন্যা (যায়নাব) তাঁর নিকট লোক পাঠালেন যে, আমার এক পুত্র মরণাপন্ন অবস্থায় রয়েছে, তাই আপনি আমাদের নিকট আসুন। তিনি বলে পাঠালেন, (তাঁকে) সালাম দিবে এবং বলবে, আল্লাহরই অধিকারে যা কিছু তিনি নিয়ে যান আর তাঁরই অধিকারে যা কিছু তিনি দান করেন। তাঁর নিকট সকল কিছুরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে। কাজেই সে যেন ধৈর্য ধারণ করে এবং সাওয়াবের অপেক্ষায় থাকে। তখন তিনি তাঁর কাছে কসম দিয়ে পাঠালেন, তিনি যেন অবশ্যই আগমন করেন। তখন তিনি দণ্ডায়মান হলেন এবং তাঁর সাথে ছিলেন সা’দ ইবনে উবাদাহ, মু‘আয ইবনে জাবাল, উবাই ইবনে কা’ব, যায়েদ ইবনে সাবিত (রা.) এবং আরও কয়েকজন। তখন শিশুটিকে রাসূল (সা.) -এর কাছে তুলে দেয়া হলো। তখন সে ছটফট করছিল। বর্ণনাকারী বলেন, আমার ধারণা যে, তিনি এ কথা বলেছিলেন, যেন তার শ্বাস মশকের মত (শব্দ হচ্ছিল)। আর রাসূল (সা.)-এর দু’ চক্ষু বেয়ে অশ্রু ঝরছিল। সা’দ (রা.) বললেন, হে আল্লাহ্র রাসূল! একি? তিনি বললেন, এ হচ্ছে রহমত, যা আল্লাহ্ তাঁর বান্দার অন্তরে গচ্ছিত রেখেছেন। আর আল্লাহ্ তো তাঁর দয়ালু বান্দাদের প্রতিই দয়া করেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১২৮৪]
তবে একজন মুসলিমের করণীয় হচ্ছে এই দুঃখকে বাড়তে না দেয়া, এই দুঃখের সাথে অগ্রসর না হওয়া; যাতে করে এই দুঃখ তার জীবনের উপর ও ইবাদত-বন্দেগীর উপর প্রভাব ফেলতে না পারে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم