প্রশ্ন
অনেক আগে একটি ঘটনা শুনেছিলাম। এক সাহাবি সারা রাত নামাজ পড়তেন। কিন্তু রাসূল (সা.) তাকে এভাবে নামাজ পড়তে নিষেধ করেছেন। আমি সাহাবির নামটা ভুলে গিয়েছি। তার নামটা কি দয়া করে বলা যাবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلم
সাহাবায়ে কেরাম ইবাদাতের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহী ছিলেন। তারা ইবাদাতের জন্য সুযোগ খুঁজতেন। যখনই সময় পেতেন ইবাদাতে মশগুল হয়ে যেতেন। তদুপরি আপনি যার ঘটনার কথা জিজ্ঞেস করেছেন তার নাম হল আবদুল্লাহ ইবনে আমর ইবনে আস (রা.)। তার ঘটনাটি সহিহ বুখারিতে বর্ণিত হয়েছে।
হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ دَخَلَ عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ أَلَمْ أُخْبَرْ أَنَّكَ تَقُومُ اللَّيْلَ وَتَصُومُ النَّهَارَ قُلْتُ بَلَى قَالَ فَلَا تَفْعَلْ قُمْ وَنَمْ وَصُمْ وَأَفْطِرْ فَإِنَّ لِجَسَدِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِعَيْنِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْرِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّ لِزَوْجِكَ عَلَيْكَ حَقًّا وَإِنَّكَ عَسَى أَنْ يَطُولَ بِكَ عُمُرٌ وَإِنَّ مِنْ حَسْبِكَ أَنْ تَصُومَ مِنْ كُلِّ شَهْرٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فَإِنَّ بِكُلِّ حَسَنَةٍ عَشْرَ أَمْثَالِهَا فَذَلِكَ الدَّهْرُ كُلُّهُ قَالَ فَشَدَّدْتُ فَشُدِّدَ عَلَيَّ فَقُلْتُ فَإِنِّي أُطِيقُ غَيْرَ ذَلِكَ قَالَ فَصُمْ مِنْ كُلِّ جُمُعَةٍ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ قَالَ فَشَدَّدْتُ فَشُدِّدَ عَلَيَّ قُلْتُ أُطِيقُ غَيْرَ ذَلِكَ قَالَ فَصُمْ صَوْمَ نَبِيِّ اللَّهِ دَاوُدَ قُلْتُ وَمَا صَوْمُ نَبِيِّ اللَّهِ دَاوُدَ قَالَ نِصْفُ الدَّهْرِ
আব্দুল্লাহ ইবনে আমর ইবনুল আস (রা.) তাঁর নিজের ঘটনা বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) আমার কাছে এলেন এবং বললেন, আমি কি শুনিনি যে, তুমি রাতভর নামায পড় আর দিনে রোযা রাখ? আমি বললাম, জী হাঁ! তিনি বললেন, এমনটা করো না। (নামাযে) দাঁড়াবে এবং ঘুমাবে, রোযা রাখবে এবং রোযা ছাড়াও থাকবে। কারণ তোমার শরীরেরও তোমার উপর হক আছে, তোমার চোখেরও তোমার উপর হক আছে, তোমার অভ্যাগতেরও তোমার উপর হক আছে এবং তোমার স্ত্রীরও তোমার উপর হক আছে। আর সম্ভবত তোমার আয়ু দীর্ঘ হবে। তোমার পক্ষে এ-ই যথেষ্ট যে, প্রতি মাসে তিন দিন রোযা রাখবে, কারণ প্রত্যেক নেক আমলের পরিবর্তে আছে তার দশ গুণ। ফলে এটিই সারা বছরের রোযা হবে। তিনি বলেন, কিন্তু আমি কাঠিন্য অন্বেষণ করলাম, ফলে আমার উপরও কাঠিন্য বর্তাল। আমি বললাম, আমি তো এতদ্ভিন্নেরও সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে প্রতি সপ্তাহে তিন রোযা রাখ। আমি আরো কাঠিন্য অন্বেষণ করলাম, ফলে আমার উপর আরো কাঠিন্য বর্তাল। আমি বললাম, আমি তো এতদ্ভিন্নের সামর্থ্য রাখি। তিনি বললেন, তাহলে আল্লাহর নবী দাউদের রোযা রাখ। আমি বললাম, আল্লাহর নবী দাউদের রোযা কী? তিনি বললেন, ‘নিসফুদ দাহর’। (অর্থাৎ একদিন পর একদিন রোযা রাখা।) (সহীহ বুখারী, হাদীস ৬১৩৪)
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم