প্রশ্ন
ইজতিমার ময়দানে যে আখেরি মোনাজাত করা হয় তা কি বিদআত?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
সম্মিলিত মোনাজাত বিদআত নয়। বিভিন্ন হাদিস দ্বারা বিষয়টি প্রমাণিত। হাদিস শরিফে এসেছে,
سَمِعْتُ أَنَسَ بْنَ مَالِكٍ، قَالَ أَتَى رَجُلٌ أَعْرَابِيٌّ مِنْ أَهْلِ الْبَدْوِ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَوْمَ الْجُمُعَةِ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ، هَلَكَتِ الْمَاشِيَةُ هَلَكَ الْعِيَالُ هَلَكَ النَّاسُ. فَرَفَعَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَدَيْهِ يَدْعُو، وَرَفَعَ النَّاسُ أَيْدِيَهُمْ مَعَهُ يَدْعُونَ
‘আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক বেদুঈন জুমআর দিন রাসূলূল্লাহ (সা.)-এর নিকট উপস্থিত হয়ে বলল, হে আল্লাহর রাসূল! (অনাবৃষ্টিতে) পশুগুলো মরে যাচ্ছে, পরিবার-পরিজন মারা যাচ্ছে, মানুষ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তখন আল্লাহর রাসূল (সা.) দোয়ার জন্য দু’হাত উঠালেন। লোকজনও দোয়ার জন্য আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে হাত উঠিয়ে দোয়া করতে লাগলেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১০২৯]
আরেক হাদিসে এসেছে,
عَنْ حَبِيبِ بن مَسْلَمَةَ الْفِهْرِيُّ وَكَانَ مُسْتَجَابًا أَنَّهُ أُمِّرَ عَلَى جَيْشٍ فَدَرَّبَ الدُّرُوبَ، فَلَمَّا لَقِيَ الْعَدُوَّ، قَالَ لِلنَّاسِ : سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، يَقُولُ : لا يَجْتَمِعُ مَلأٌ فَيَدْعُو بَعْضُهُمْ وَيُؤَمِّنُ سَائِرُهُمْ إِلا أَجَابَهُمُ اللَّهُ
‘হাবীব ইবনে মাসলামা আলফিহরী (রা.), যিনি বড় ‘মুস্তাজাবুদ দাওয়াহ’ ছিলেন, একবার তাকে একটি বাহিনীর আমীর নিযুক্ত করা হয়। তিনি যুদ্ধের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সমাপ্ত করার পর যখন যুদ্ধের সময় নিকটবর্তী হল তখন সহযোদ্ধাদের লক্ষ্য করে বললেন, আমি রাসূল (সা.)-কে বলতে শুনেছি যে, কিছু মানুষ যখন কোথাও একত্র হয়ে এভাবে দোয়া করে যে, একজন দোয়া করে এবং অন্যরা আমীন বলে তো আল্লাহ তাআলা অবশ্যই তাদের দোয়া কবুল করেন।’ [আলমুজামুল কাবীর, তাবারানী ৪/২৬; মুসতাদরাকে হাকেম ৩/৩৪৭]
তাছাড়া সম্মিলিত দোয়া আল্লাহর কাছে কবুল হওয়ার অধিক নিকটবর্তী হয়ে থাকে। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,
‘যখন কোনো একদল লোক কোনো একটি বিষয় চাওয়ার জন্য আল্লাহর দরবারে হাত উঠায়, তখন আল্লাহর উপর হক হল, তাদের কাঙ্ক্ষিত বস্তু তাদেরকে দিয়ে দেওয়া।’ [আল মুজামুল কাবীর, হাদিস: ৬১৪২]
কাজেই ইজতিমার আখেরি মোনাজাতকে বিদআত বলার কোনো সুযোগ নেই। তবে কেউ যদি এই মোনাজাতকে জরুরি বিষয় মনে করে তাহলে তা বিদআতের পর্যায়ে পৌঁছে যাবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم