প্রশ্ন
আমার উপর এ বছর যাকাত ওয়াজিব হয়েছে। আমি কোন কোন ধরনের লোকদেরকে আমার যাকাতের টাকা প্রদান করতে পারব?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
মোট ৮ ধরনের লোকদেরকে যাকাতের টাকা প্রদান করা যাবে।
পবিত্র কুরআন মাজিদে যাকাত প্রদানের খাতের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
إِنَّمَا الصَّدَقَاتُ لِلْفُقَرَاءِ وَالْمَسَاكِينِ وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا وَالْمُؤَلَّفَةِ قُلُوبُهُمْ وَفِي الرِّقَابِ وَالْغَارِمِينَ وَفِي سَبِيلِ اللَّهِ وَابْنِ السَّبِيلِ
অর্থ: ‘নিশ্চয়ই ছাদাক্বাহ্ (যাকাত) হচ্ছে ফকীর ও মিসকীনদের জন্য এবং এতে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য, আর যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য। (তা বণ্টন করা যায়) দাস আযাদ করার ক্ষেত্রে, ঋণগ্রস্তদের মধ্যে, আল্লাহর রাস্তায় এবং মুসাফিরদের মধ্যে।’ [সূরা তাওবা, আয়াত: ৬০]
নিম্নে প্রত্যেকটি খাত আলাদাভাবে আলোচনা করা হলো:-
১। ফকীর : ফকির হলো ঐ ব্যক্তি যার নিকট সন্তান-সন্ততির প্রয়োজন সমাধা করার মত সম্বল নেই অথবা যার নিকট যাকাত ওয়াজিব হওয়ার সমপরিমাণ অর্থ সম্পদ নেই।
২। মিসকীন : মিসকীন হলো ঐ ব্যক্তি যে নিজের প্রয়োজন মিটাতেও পারে না, মুখ ফুটে চাইতেও পারে না। বাহ্যিকভাবে তাকে সচ্ছল বলেই মনে হয়।
৩। যাকাত আদায়কারী ও হেফাযতকারী : যে ব্যক্তি যাকাত আদায়, হেফাযত ও বণ্টনের কাজে নিয়োজিত, উক্ত ব্যক্তি সম্পদশালী হলেও চাইলে সে যাকাতের অংশ গ্রহণ করতে পারবে।
৪। ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোনো অমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা : এ প্রকারটি বর্তমানে রহিত হয়ে গেছে।
৫। দাস মুক্তির জন্য : এ প্রকারটি বর্তমানে প্রচলিত নয়।
৬। ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি : ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে তার ঋণ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাত প্রদান করা যাবে।
৭। আল্লাহর রাস্তায় : আল্লাহর দ্বীনকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে যে কোনো ধরনের প্রচেষ্টা ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ বা আল্লাহর রাস্তার অন্তর্ভুক্ত। জিহাদ, দ্বীনী ইলম অর্জনের যাবতীয় পথ এবং দ্বীন প্রচারের যাবতীয় মাধ্যম এ খাতের অন্তর্ভুক্ত।
৮। মুসাফির : সফরে গিয়ে যার পাথেয় শেষ হয়ে গেছে সে ব্যক্তিকে যাকাতের অর্থ প্রদান করে বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে যাকাতের অর্থ দান করা যাবে। এক্ষেত্রে উক্ত মুসাফির সম্পদশালী হলেও তাকে যাকাত প্রদান করা যাবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم