প্রশ্ন
শাসন ক্ষমতা চাওয়ার ব্যাপারে ইসলাম কী বলে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলামে শাসন ক্ষমতা চাওয়া নাজায়েয। তবে কোনো প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তিকে যদি তা দেওয়া হয় তাহলে একে আমানত ও জিম্মাদারি মনে করে আঞ্জাম দিবে।
হাদিসে এসেছে,
عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ لِي النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ سَمُرَةَ، لَا تَسْأَلِ الْإِمَارَةَ، فَإِنَّكَ إِذَا أُعْطِيتَهَا عَنْ مَسْأَلَةٍ وُكِلْتَ فِيهَا إِلَى نَفْسِكَ، وَإِنْ أُعْطِيتَهَا عَنْ غَيْرِ مَسْأَلَةٍ أُعِنْتَ عَلَيْهَا
‘আব্দুর রাহমান ইবনু সামুরাহ (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) আমাকে বললেন, হে আব্দুর রাহমান ইবনে সামুরাহ! রাষ্ট্রীয় পদ চেয়ে নিবে না। কারণ তোমার চাওয়ার কারণে তোমাকে পদ দেয়া হলে এর দায়-দায়িত্ব তোমার উপরই বর্তাবে (তুমি আল্লাহর সাহায্য পাবে না)। আর চাওয়া ছাড়া তোমাকে নেতৃত্ব পদ দেয়া হলে তুমি দায়িত্ব পালনে (আল্লাহর পক্ষ থেকে) সাহায্য পাবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬৬২২; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৬৫২, সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ২৯২৯]
অন্য হাদিসে এসেছে,
عَنْ أَبِي مُوسَى، قَالَ دَخَلْتُ عَلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَا وَرَجُلاَنِ مِنْ بَنِي عَمِّي فَقَالَ أَحَدُ الرَّجُلَيْنِ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَمِّرْنَا عَلَى بَعْضِ مَا وَلاَّكَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ . وَقَالَ الآخَرُ مِثْلَ ذَلِكَ فَقَالَ إِنَّا وَاللَّهِ لاَ نُوَلِّي عَلَى هَذَا الْعَمَلِ أَحَدًا سَأَلَهُ وَلاَ أَحَدًا حَرَصَ عَلَيْهِ
‘আবু মূসা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি এবং আমার দু’চাচাত ভাই রাসূল (সা.)-এর নিকট উপস্থিত হলাম। ঐ দুই ব্যক্তির একজন বললো, হে আল্লাহর রাসূল! মহান আল্লাহ আপনাকে যে সমস্ত রাজ্যের কর্তৃত্ব প্রদান করেছেন তার কিছু অংশে আমাদেরকে আমীর নিযুক্ত করুন। অপরজনও অনুরূপ বললো। তখন তিনি বললেন, আল্লাহর কসম! আমরা এমন কাউকে নেতৃত্বে আসীন করিনা, যে তার জন্য প্রার্থী হয় এবং যে তার জন্য লালায়িত হয়।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৫৬৬]
আরেক হাদিসে এসেছে,
يَا أَبَا ذَرٍّ إِنَّكَ ضَعِيفٌ وَإِنَّهَا أَمَانَةٌ وَإِنَّهَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ خِزْىٌ وَنَدَامَةٌ إِلاَّ مَنْ أَخَذَهَا بِحَقِّهَا وَأَدَّى الَّذِي عَلَيْهِ فِيهَا
‘হে আবু যার! তুমি দূর্বল অথচ এটা হচ্ছে একটা আমানত। আর কিয়ামতের দিন এ হবে লাঞ্ছনা ও অনুশোচনা। তবে যে এটি যথাযথ রূপে গ্রহন করবে এবং তার দায়িত্ব যথাযথ পালন করবে (তার কথা স্বতন্ত্র)।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৪৫৬৮]
হ্যাঁ, যদি কোথাও এমন পাওয়া যায় যেখানে শাসন ক্ষমতা অযোগ্যদের দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে এবং শরয়ি মানদণ্ডে উত্তীর্ণ যোগ্য ব্যক্তি মাত্র একজন বিদ্যমান রয়েছে এবং তার নিজের উপর দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে যে, সে দায়িত্ব সুচারুরূপে আঞ্জাম দিতে পারবে তাহলে সে শাসন ক্ষমতা চাইতে পারে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم