প্রশ্ন
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ আমি দ্বীনের পথে চলার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করি। আমি একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
প্রশ্ন ১. আমি মেয়েদের থেকে নিজেকে যথাসাধ্য দূরে রাখার চেষ্টা করি। একটা মেয়েকে আমার তিন বছর ধরে ভালো লাগে কিন্তু তাকে কখনো সরাসরি সাক্ষাৎ হয়নি। তার সাথে আমার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা হয়। সে আমায় এক বান্ধবীর ছোট বোনের বান্ধবী। মেয়েটা খুব ভালো সে ইন্টার ফার্স্ট ইয়ারে পড়ে। হঠাৎ কিছুদিন ধরে কেন জানি তার জন্য মনের ভিতর একটু আবেগ কাজ করছে। তার কথা খুব মনে পড়ে। তার সাথে সরাসরি রিলেশনে যাওয়ার ব্যাপারে প্রেমের ব্যাপারে কথা বলি না। নিজের ভেতরে অনুভূতিগুলো আটকে রেখেছি। আমি তাকে পছন্দ করি। এ বিষয়টি সে তার বান্ধবী থেকে জানতে পেরেছে । সে আমার সাথে রিলেশনে যাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহী না । এই যে অনুভূতি এর জন্য কি আমার কোন গুনাহ হবে? যদি গুনাহ হয় তাহলে এর থেকে বাঁচার উপায় কি?
প্রশ্ন ২. আমি কিভাবে আল্লাহকে ভালোবাসবো? অন্তরে শুধু তারই ভালোবাসা থাকবে? কিভাবে মুক্তাকী বান্দা হবো? শুনেছি কেয়ামতের দিন উত্তম চরিত্রবান ব্যক্তি আশ্রয় পাবে। কিভাবে আমার চরিত্রকে আমি উত্তম বানাবো, যার ফলশ্রুত আমি মহান আল্লাহ তাআলার আরশে আজীমে আশ্রয় পাবো ।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রিয় দ্বীনি ভাই,
প্রথম কথা হচ্ছে, আল্লাহ তাআলা আমাদের সৃষ্টিকর্তা। তিনিই সবচে ভালো জানেন, আমরা কোন পথে কিভাবে চললে, আমাদের দুনিয়ার জীবনে সুখি হবো, সকল পেরেশানী থেকে মুক্ত থাকতে পারব। এবং সর্বাবস্থায় আখেরাতে জান্নাত লাভ করতে পারব।
নারী-পুরুষ তাদের যৌন জীবনে কেমন আচরণ করবে। কার সাথে কেমন সম্পর্ক রাখবে। কোথাও হারামে জড়িয়ে যাবার ভয় থাকলে সেখানে কেমন আচরণ করতে হবে। ইত্যাদি বিষয়ে আল্লাহ তাআলা বলেন,
ولا تقربوا الزنا إنه كان فاحشة وساء سبيلا
অর্থঃ
এবং ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই তা অশ্লীলতা ও বিপথগামিতা। [সুরা বনি ইসরাইল : 32]
এর অর্থ হচ্ছে, জিনা তো হারামই। বরং জিনার দিকে নিয়ে যায়, তার সাথে সম্পৃক্ত কোনো কিছুর কাছে যেতেও আল্লাহ তাআলা নিষেধ করেছেন।
সুতরাং আশা করি আপনি বিষয়টি বুঝতে পারছেন, কোনো গাইরে মাহরাম নারীর সাথে প্রয়োজন ছাড়া কথা বলাও নিষেধ। সেখানে তার প্রতি যদি কোনো ধরণের অনুভূতি কাজ করে এবং সেই অনুভূতি নিয়ে কথা বলা হয়, তাহলে আল্লাহ তাআলার কাছে কতটা গর্হিত বলে বিবেচিত হবে তা সহজেই অনুমেয়।
নিজেকে দ্বীনের ওপর অটল অবিচল রাখার জন্য, প্রথম দৃঢ় প্রতিজ্ঞা করুন, কোনো পরিস্থিতেই দ্বীনের বাইরে কোনো কাজ করবেন না। নিয়মিত কুরআন তিলাওয়াত করুন, অল্প হলেও। সকাল সন্ধ্যা জিকির-আজকার করার চেষ্টা করুন। দ্বীনি কিতাবাদি পড়ার চেষ্টা করুন।
সবচে গুরুত্বপূর্ণ হলো, স্থানীয় কোনো বিজ্ঞ পরহেজগার আলেমের সাথে পরামর্শ করে জীবন পরিচালনা করার চেষ্টা করুন। এ বিষয়টি আপনাকে দ্বীনের ওপর চলতে অনেক সহজ করে দিবে, ইনশাআল্লাহ।
আল্লাহ তাআলা তাওফিক দান করুন। আমীন ।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم