প্রশ্ন
একজন বক্তাকে তওবার গুরুত্ব বয়ান করতে গিয়ে বলতে শুনলাম, সকালবেলা মূসা (আ.) আল্লাহর কাছে যমীনের বুকে সবচেয়ে বড় নাফরমান ব্যক্তিকে দেখতে চাইলেন। আল্লাহ তাআলা বললেন, অমুক স্থানে যাও। মূসা (আ.) সেখানে এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। বিকালে আবার আবেদন করলেন যমীনের বুকে সবচেয়ে বড় ওলীকে দেখার। আল্লাহর নির্দেশে নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে সকালের ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন। এতে তিনি অনেক আশ্চর্য হলেন। একই ব্যক্তি নাফরমান ও ওলী হয় কিভাবে? মূলত তওবার মাধ্যমে সে ওলী হয়েছিল। জানতে চাচ্ছি, এমন কোনো ঘটনা আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
এমন একটি ঘটনা লোকমুখে প্রচলিত থাকলেও তার কোনো ভিত্তি নেই। কাজেই তওবার গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে কোনো ভিত্তিহীন বর্ণনা করা বৈধ হবে না।
তওবার গুরুত্ব সম্পর্কে অনেক সহিহ হাদিস বর্ণিত হয়েছে। সেগুলো বর্ণনা করাই যথেষ্ট। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,
‘বনী ইসরাঈলের মাঝে এমন এক ব্যক্তি ছিল যে, নিরানব্বইটি মানুষ হত্যা করেছিল। অতঃপর বের হয়ে একজন পাদরীকে জিজ্ঞেস করল, আমার তওবা কবুল হবার আশা আছে কি? পাদরী বলল, না। তখন সে পাদরীকেও হত্যা করল। অতঃপর পুনরায় সে জিজ্ঞাসাবাদ করতে লাগল। তখন এক ব্যক্তি তাকে বলল, তুমি অমুক স্থানে চলে যাও। সে রওয়ানা হল এবং পথিমধ্যে তার মৃত্যু এসে গেল। সে তার বক্ষদেশ দ্বারা সে স্থানটির দিকে ঘুরে গেল। মৃত্যুর পর রহমত ও আযাবের ফেরেশতামন্ডলী তার রূহকে নিয়ে বাদানুবাদে লিপ্ত হলেন। আল্লাহ্ সামনের ভূমিকে আদেশ করলেন, তুমি মৃত ব্যক্তির নিকটবর্তী হয়ে যাও। এবং পশ্চাতে ফেলে আসা স্থানকে (যেখানে হত্যাকান্ড ঘটেছিল) আদেশ দিলেন, তুমি দূরে সরে যাও। অতঃপর ফেরেশতাদের উভয় দলকে নির্দেশ দিলেন— তোমরা এখান থেকে উভয় দিকের দূরত্ব পরিমাপ কর। পরিমাপ করা হল, দেখা গেল যে, মৃত লোকটি সামনের দিকে এক বিঘত বেশি এগিয়ে আছে। কাজেই তাকে ক্ষমা করা হল।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৪৭০]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم