প্রশ্ন
আমার চোখে অপারেশন হয়েছে। ডাক্তার বলেছেন এক সপ্তাহ চোখে পানি না লাগাতে। এক্ষেত্রে আমার উপর যদি গোসল ফরজ হয়, তাহলে চোখে পানি দেওয়া কি জরুরি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
কারো উপর গোসল ফরজ হলে তার সম্পূর্ণ শরীরে পানি পৌঁছানো জরুরি।
কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وإن كنتم جنبا فاطهروا
‘আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তবে ভালোভাবে পবিত্র হও।’ [মায়েদা, আয়াত: ৬]
তবে প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার পক্ষে চোখে পানি পৌঁছানো যেহেতু ক্ষতিকর, তাই চোখের উপর মাসাহ করতে সক্ষম হলে শুধু মাসাহ করে নিবেন। সেটাও যদি সম্ভব না হয়, তাহলে চোখের উপর কোনো পট্টি বেঁধে তার উপর মাসাহ করবেন আর মাথার অন্যান্য অংশ ধুয়ে ফেলবেন।
لَا يُكَلِّفُ اللَّهُ نَفْسًا إِلَّا وُسْعَهَا
‘আল্লাহ কোনো ব্যক্তিকে তার সামর্থ্যের বাইরে দায়িত্ব দেন না।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২৮৬]
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘জাবের (রা.) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা কোন এক সফরে বের হলে আমাদের মধ্যকার একজনের মাথা পাথরের আঘাতে ফেটে যায়। ঐ অবস্থায় তার স্বপ্নদোষ হলে সে সাথীদের জিজ্ঞেস করল, তোমরা কি আমার জন্য তায়াম্মুমের সুযোগ গ্রহণের অনুমতি পাও? তারা বলল, যেহেতু তুমি পানি ব্যবহার করতে সক্ষম, তাই তোমাকে তায়াম্মুম করার সুযোগ দেয়া যায় না। অতএব সে গোসল করল। ফলে সে মৃত্যুবরণ করল। আমরা রাসূল (সা.)-এর নিকট আসলে তাঁকে বিষয়টি জানানো হলো। তিনি বললেন: এরা অন্যায়ভাবে তাকে হত্যা করেছে। আল্লাহ এদের ধ্বংস করুন। তাদের যখন (সমাধান) জানা ছিল না, তারা কেন জিজ্ঞেস করে তা জেনে নিল না। কারণ অজ্ঞতার প্রতিষেধক হচ্ছে জিজ্ঞেস করা। ঐ লোকটির জন্য তায়াম্মুম করাই যথেষ্ট ছিল। আর যখমের স্থানে ব্যাণ্ডেজ করে তার উপর মাসাহ করে শরীরের অন্যান্য স্থান ধুয়ে ফেললেই যথেষ্ট হত।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৩৩৬]
বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭৭; রদ্দুল মুহতার ১/২৫৭-২৫৮; কিতাব আসল ১/৪২
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم