প্রশ্ন
বর্তমানে দেখা যায়, কারো সাথে কারো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থাকলে একে অপরকে ঘায়েল করার জন্য ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবনের অপছন্দনীয় বিষয় জনসম্মুখে তুলে ধরে। প্রশ্ন হল, এ কাজটি কতটুকু শরিয়ত সম্মত?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বের কারণে কারো ব্যক্তিগত বা পারিবারিক জীবনের অপছন্দনীয় বিষয় জনসম্মুখে তুলে শরিয়তের দৃষ্টিতে নিষিদ্ধ ও অত্যন্ত গর্হিত একটি কাজ। এটি গীবতের অন্তর্ভুক্ত। আর কুরআন হাদিসে গীবত করাকে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَلَا تَجَسَّسُوا وَلَا يَغْتَبْ بَعْضُكُمْ بَعْضًا أَيُحِبُّ أَحَدُكُمْ أَنْ يَأْكُلَ لَحْمَ أَخِيهِ مَيْتًا فَكَرِهْتُمُوهُ وَاتَّقُوا اللَّهَ إِنَّ اللَّهَ تَوَّابٌ رَحِيمٌ
‘আর তোমরা গোপন বিষয় অনুসন্ধান করো না এবং একে অপরের গীবত করো না। তোমাদের মধ্যে কি কেউ তার মৃত ভাইয়ের গোশত খেতে পছন্দ করবে? তোমরা তো তা অপছন্দই করে থাক। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ অধিক তাওবা কবুলকারী, অসীম দয়ালু।’ [সূরা হুজুরাত, আয়াত: ১২]
হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ» ؟ قَالُوا اللَّهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ قَالَ: «ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ» قِيلَ: أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ: إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدِ اغْتَبْتَهُ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ مَا تَقُولُ فَقَدْ بَهَتَّهُ
‘আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা কি জান, গীবত কী জিনিস? তাঁরা বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন, (গীবত হল) তোমার ভাইয়ের সম্পর্কে এমন কিছু আলোচনা করা, যা সে অপছন্দ করে। প্রশ্ন করা হল, আমি যা বলছি তা যদি আমার ভাই এর মধ্যে থেকে থাকে তবে আপনি কি বলেন? তিনি বললেন, তুমি তার সম্পর্কে যা বলছ তা যদি তার মধ্যে থাকে তাহলেই তুমি তার গীবত করলে। আর যদি তা তার মধ্যে না থাকে তা হলে তো তুমি তার প্রতি অপবাদ আরোপ করলে।’ [সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৬৩৫৭]
কাজেই এ জাতীয় গর্হিত কাজ থেকে বিরত থাকা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানি ও নৈতিক দায়িত্ব।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم