প্রশ্ন
একজন বক্তার মুখে শুনেছি, মেরাজের রাতে নামাজ নাকি পঞ্চাশ ওয়াক্ত ফরজ করা হয়েছিল। পরে রাসূল (সা.)-এর আবেদনের প্রেক্ষিতে পর্যায়ক্রমে পাঁচ ওয়াক্ত করা হয়েছে। জানতে চাচ্ছি, উক্ত তথ্য কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
জ্বি, উক্ত তথ্য সঠিক। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন,
‘তারপর আমার উপর দৈনিক ৫০ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ করা হল। এরপর আমি ফিরে আসলাম। মূসা (আ.)-এর সম্মুখ দিয়ে যাওয়ার সময় তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করলেন আল্লাহ তাআলা আপনাকে কী আদেশ করেছেন? রাসূল (সা.) বললেন, আমাকে দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজের আদেশ দেয়া হয়েছে। তিনি বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতে সমর্থ হবে না। আল্লাহর কসম। আমি আপনার আগে লোকদের পরীক্ষা করেছি এবং বানী ইসরাঈলের হিদায়াতের জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছি। তাই আপনি আপনার প্রতিপালকের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের (বোঝা) হালকা করার জন্য আরজ করুন। আমি ফিরে গেলাম। ফলে আমার উপর হতে দশ হ্রাস করে দিলেন। আমি আবার মূসা (আ.)-এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আবার আগের মত বললেন, আমি আবার ফিরে গেলাম। ফলে আল্লাহ তাআলা আরো দশ কমিয়ে দিলেন। ফিরার পথে মূসা (আঃ)-এর নিকট পৌঁছলে, তিনি আবার আগের কথা বললেন, আমি আবার ফিরে গেলাম। আল্লাহ তাআলা আরো দশ হ্রাস করলেন। আমি মূসা (আ.)-এর নিকট ফিরে এলাম। তিনি আবার ঐ কথাই বললেন। আমি আবার ফিরে গেলাম। তখন আমাকে প্রতিদিন দশ নামাজের আদেশ দেয়া হয়। আমি ফিরে এলাম। মূসা (আ.) ঐ কথাই আগের মত বললেন। আমি আবার ফিরে গেলাম, তখন আমাকে পাঁচ নামাজের আদেশ করা হয়। তারপর মূসা (আ.) নিকট ফিরে এলাম। তিনি বললেন, আপনাকে কী আদেশ দেয়া হয়েছে। আমি বললাম, আমাকে দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায়ের আদেশ দেয়া হয়েছে? মূসা (আ.) বললেন, আপনার উম্মত দৈনিক পাঁচ নামাজ আদায় করতেও সমর্থ হবে না। আপনার পূর্বে আমি লোকদের পরীক্ষা করেছি। বনী ইসরাঈলের হিদায়াতের জন্য কঠোর শ্রম দিয়েছি। আপনি আপনার রবের নিকট ফিরে যান এবং আপনার উম্মতের জন্য আরো সহজ করার আরজি করুন। রাসূল (সা.) বললেন, আমি আমার রবের নিকট আরজি করেছি, এতে আমি লজ্জাবোধ করছি। আর আমি এতেই সন্তুষ্ট হয়েছি এবং তা মেনে নিয়েছি।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৮৮৭]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم