প্রশ্ন
আমাদের এলাকার মসজিদে জুমআর দ্বিতীয় আজান খতিব সাহেবের সামনে দেওয়া হত। কিছুদিন আগে মসজিদ কমিটির এক সদস্য বললেন, জুমআর দ্বিতীয় আজান মসজিদের দরজায় দাঁড়িয়ে দিতে হয়। উনার এ বক্তব্যের কারণে এলাকার মানুষের মাঝে এক বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। জানতে চাচ্ছি, তার এ বক্তব্য কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
রাসূল (সা.)-এর যুগ, আবু বকর (রা.) ও উমর (রা.)-এর যুগে জুমআর আজান একটি দেওয়া হত। পরবর্তীতে উসমান (রা.)-এর আমলে মুসলমানদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে তিনি আরেকটি আজানের প্রচলন করেন। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ سَمِعْتُ السَّائِبَ بْنَ يَزِيدَ، يَقُولُ إِنَّ الأَذَانَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ كَانَ أَوَّلُهُ حِينَ يَجْلِسُ الإِمَامُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ عَلَى الْمِنْبَرِ فِي عَهْدِ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم وَأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ فَلَمَّا كَانَ فِي خِلاَفَةِ عُثْمَانَ ـ رضى الله عنه ـ وَكَثُرُوا، أَمَرَ عُثْمَانُ يَوْمَ الْجُمُعَةِ بِالأَذَانِ الثَّالِثِ، فَأُذِّنَ بِهِ عَلَى الزَّوْرَاءِ، فَثَبَتَ الأَمْرُ عَلَى ذَلِكَ
‘সায়িব ইবনে ইয়াযীদ (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল (সা.) আবু বকর (রা.) এবং উমর (রা.)-এর যুগে জুমআর দিন ইমাম যখন মিম্বারের উপর বসতেন, তখন প্রথম আজান দেয়া হত। অতঃপর যখন উসমান (রা.)-এর খিলাফাতের সময় এল এবং লোকসংখ্যা বৃদ্ধি পেল, তখন জুমআর দিন তৃতীয় (সে যুগে ইকামত কে আজান হিসেবে গন্য করা হত) আজানের নির্দেশ দেন। ‘যাওরা’ নামক স্থান হতে এ আজান দেয়া হয়, পরে এ আজানের সিলসিলা চলতে থাকে।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ৯১৬]
তবে কোনো সহিহ হাদিসে এ কথা আসেনি যে জুমআর দ্বিতীয় আজান মসজিদের দরজায় দেওয়া হত। বরং ফুকাহায়ে কেরাম একথা বলেছেন যে, জুমআর দ্বিতীয় আজান ইমাম সাহেব মিম্বরে বসার পর তার সম্মুখে দিতে হবে। [তাফসীরে রুহুল মাআনী ১৪/২৯৩]
সুতরাং উক্ত ব্যক্তির বক্তব্য সঠিক নয়। তবে কোনো সমস্যার কারণে যদি দ্বিতীয় আজান মসজিদের দরজায় দিতে হয় তাহলে তা আদায় হয়ে যাবে।
রদ্দুল মুহতার ৩/৯৮
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم