প্রশ্ন
আমি শুনেছি, কবরে তিনটি সওয়াল করা হবে। মুমিন ব্যক্তিরা সেই সওয়ালের জবাব দিতে পারবে। আমি জানতে চাচ্ছি, যে সকল মুমিনরা পাপাচারী, তারা সেই সওয়ালের জবাব দিতে পারবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হাদিসের ভাষ্য থেকে বুঝা যায় মুনাফিক ও কাফেররা ছাড়া সকল মুমিন মুসলমান সেই সওয়ালের জবাব দিতে পারবে। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আনাস ইবনে মালিক (রা) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) বলেছেন, বান্দাকে যখন তার কবরে রাখা হয় এবং তার সাথীরা এতটুকু মাত্র দূরে যায় যে, সে তখনও তাদের জুতার আওয়াজ শুনতে পায়। এ সময় দু’জন ফেরেশতা তার নিকট এসে তাকে বসান এবং তাঁরা বলেন, এ ব্যক্তি অর্থাৎ মুহাম্মাদ (সা.) সম্পর্কে তুমি কী বলতে? তখন মুমিন ব্যক্তি বলবে, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, তিনি আল্লাহর বান্দা এবং তাঁর রাসূল। তখন তাঁকে বলা হবে, জাহান্নামে তোমার অবস্থান স্থলটির দিকে নযর কর, আল্লাহ তোমাকে তার বদলে জান্নাতের একটি অবস্থান স্থল দান করেছেন। তখন সে দু’টি স্থলের দিকেই দৃষ্টি করে দেখবে। কাতাদাহ (রহ.) বলেন, আমাদের নিকট বর্ণনা করা হয়েছে যে, সে ব্যক্তির জন্য তাঁর কবর প্রশস্ত করে দেয়া হবে। অতঃপর তিনি (কাতাদাহ) পুনরায় আনাস (রা.)-এর হাদীসের বর্ণনায় ফিরে আসেন। তিনি (আনাস (রাঃ)) বলেন, আর মুনাফিক বা কাফির ব্যক্তিকেও প্রশ্ন করা হবে তুমি এ ব্যক্তি (মুহাম্মাদ (সা.)) সম্পর্কে কী বলতে? সে উত্তরে বলবে, আমি জানি না। লোকেরা যা বলত আমি তা-ই বললাম। তখন তাকে বলা হবে, তুমি না নিজে জেনেছ, না তিলাওয়াত করে শিখেছ। আর তাকে লোহার মুগুর দ্বারা এমনভাবে আঘাত করা হবে, যার ফলে সে এমন বিকট চিৎকার করে উঠবে যে, দু’ জাতি (মানুষ ও জ্বিন) ছাড়া তার আশপাশের সকলেই তা শুনতে পাবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩৭৪]
এ হাদিসের ব্যাখ্যায় ইবনে হাজার হাইতামী (রহ.) বলেন,
‘এ হাদিস থেকে বুঝা যায়, মুমিন ব্যক্তি পাপাচারী হলেও কবরের সওয়ালের জবাব দিতে পারবে।’ [আল ফাতওয়া হাদিসিয়া পৃ. ৭]
তবে পাপাচারী মুমিন ব্যক্তি জবাব দিতে পারলেও সে তার গুনাহ অনুযায়ী শাস্তি ভোগ করবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم