প্রশ্ন
বর্তমানে আমাদের মাঝে অনেক বেশি মনান্তর দেখা যায়। এক মানহাজের অনুসারী আরেক মানহাজের অনুসারীকে দেখতে পারে না। এ থেকে বেরিয়ে আসার পন্থা কী?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলাম ভারসাম্যপূর্ণ দ্বীন। এখানে বাড়াবাড়িও নেই। ছাড়াছাড়িও নেই। তাই ইসলামের বিধানগুলি যদি আমরা পরিপূর্ণরূপে আঁকড়ে ধরি তাহলে আমাদের মাঝে মতান্তর থাকলেও মনান্তর থাকবে না।
তবে এ ক্ষেত্রে কয়েকটি বিষয় লক্ষ্য রাখলে আশা করা যায় আমাদের মাঝে মনান্তরের হারটা কমে আসবে। যেমন-
১. আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেছেন,
وَٱعْتَصِمُواْ بِحَبْلِ ٱللَّهِ جَمِيعًا وَلَا تَفَرَّقُواْ
‘আর তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢ়ভাবে ধারণ কর এবং বিভক্ত হয়ো না।’ [সূরা আলে ইমরান, আয়াত: ১০৩]
আমরা কে কোন দলের সেই পরিচয়ে না গিয়ে আমাদের বড় পরিচয় হতে হবে, আমরা মুসলমান। মুসলিম হিসেবে আমাদেরকে একই প্লাটফর্মের নিচে আসতে হবে।
২. সকলের মতামতকে সম্মান করে আমাকে কথা বলতে হবে। কারো মতকে একেবারে ফেলে না দিয়ে আমি যা জানি তা মানুষের সামনে প্রকাশ করব।
৩. কারো মতের স্বপক্ষে একটি সহিহ হাদিসও যদি থাকে তাহলে তার মতকে বাতিল বা গোমরা বলা যাবে না।
৪. নিজের মতকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাহকিক ছাড়াই অন্যের মতকে বাতিল বলা যাবে না।
৫. মাসআলাগত পার্থক্য থাকলেও অন্যরা ইসলামের যে খেদমত করছে তা অস্বীকার করা যাবে না। সামান্য ভুলের কারণে কারো খেদমতকে অস্বীকার করার মন-মানসিকতা থেকে আমাদেরকে বের হয়ে আসতে হবে।
৬. আমাদেরকে সকলের বক্তব্য শুনতে হবে। কারো বক্তব্য না শুনে কোনো ফয়সালায় পৌঁছা যাবে না।
৭. সকল মতের লোকদের সভায় যোগদান করতে হবে।
৮. মসজিদে সকল মাযহাবের লোকদের জন্য ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। মাসআলাগত পার্থক্যের কারণে কাউকে হেয় করা যাবে না।
৯. শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সকল মাযহাবের মতকে গুরুত্ব দিয়ে পাঠদান করতে হবে।
সুতরাং আমরা যদি এ বিষয়গুলোর প্রতি লক্ষ্য রাখতে পারি তাহলে আশা করা যায়, আমরা মনান্তর থেকে বের হয়ে আসতে পারব।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم