প্রশ্ন
ইসলামি গ্লোবালাইজেশন বাস্তবায়ন করার ক্ষেত্রে আমাদের দীনতা কোথায়? কোথায় আমাদের ফোকাস করা উচিৎ?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলামে গ্লোবালাইজেশনের ধারণা অনেক আগ থেকেই রয়েছে। একারণেই কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا
‘আর আমি তো কেবল তোমাকে সমগ্র মানবজাতির জন্য সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী হিসেবে প্রেরণ করেছি।’ [সূরা সাবা, আয়াত: ২৮]
আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
إِنِّي جَاعِلٌ فِي الْأَرْضِ خَلِيفَةً
‘নিশ্চয় আমি যমীনে একজন খলীফা সৃষ্টি করছি।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ৩০]
এই খলীফা কিন্তু নির্দিষ্ট কোনো দেশ বা জাতির জন্য নয়, বরং সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য আল্লাহ তাআলা খলীফা প্রেরণের ঘোষণা দিয়েছেন। আরেক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন যে, আমরা সবাই একই নর-নারী থেকে সৃষ্ট। কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّا خَلَقْنَاكُم مِّن ذَكَرٍ وَأُنثَىٰ
‘আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি।’ [সূরা হুজুরাত: আয়াত: ১৩]
এটিও গ্লোবালাইজেশন ধারণার পরিচয় বহন করে। আরেক আয়াতে রাসূল (সা.)-কে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরূপ ঘোষণা দিয়ে ইরশাদ করেন,
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ
‘আর আমি তো তোমাকে বিশ্ববাসীর জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।’ [সূরা আম্বীয়া, আয়াত: ১০৭]
ইসলাম কোনো দেশ বা জাতি কেন্দ্রিক ধর্ম নয়। বরং ইসলাম সকল দেশ ও জাতির ধর্ম। ইসলামের মূল কনসেপ্ট হল বিশ্বায়নের। একারণেই সাহাবায়ে কেরাম যখন বিভিন্ন দেশ বিজয় করে সমুদ্রের পারে এসে পৌঁছে ছিলেন তখন বলেছিলেন, আমি যদি জানতে পারি যে সমুদ্রের অপর পারে কোনো দেশ আছে তাহলে অবশ্যই আমি সেখানে ইসলামের দাওয়াত নিয়ে যাব। তাই আমাদেরকে ইসলামি বিশ্বায়ন ভাবনা মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। মূলত আমাদের মাঝে ইসলামি শিক্ষার অভাব থাকার কারণে আমরা বিশ্বায়ন ভাবনা বাস্তবায়ন করতে পারছি না। যদি আমরা ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা লাভ করতে পারি তাহলে আমাদের এ দীনতা দূর হবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم