প্রশ্ন
আমরা তো টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করে থাকি। কিন্তু বর্তমানে কেউ কেউ বলে টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করা যাবে না। এ ব্যাপারে আপনাদের কাছে জানতে চাচ্ছি। দয়া করে সঠিক সমাধান দিবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হাদিসে যদিও রাসূল (সা.) কয়েকটি বস্তু দিয়ে ফিতরা আদায় করতে বলেছেন। কিন্তু সে যুগে ঐ বস্তুগুলো কারেন্সির মতই প্রচলিত ছিল। তাই হানাফী মাযহাব মতে টাকা দিয়ে ফিতরা দিলে ফিতরা আদায় হয়ে যাবে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, টাকা দিয়ে ফিতরা আদায় করলে গরিবদের জন্য সহজ হবে। সে টাকা দিয়ে তার প্রয়োজনীয় বস্তু ক্রয় করে নিতে পারবে। এক্ষেত্রে আপনি যদি হাদিসে উল্লেখিত বস্তু দিয়ে ফিতরা আদায় করেন, আর ঐ গরিব লোকের সেই বস্তুর প্রয়োজন না হয় তাহলে সে তা দিয়ে কী করবে? অন্য কোথাও বিক্রি করতে গেলে সে যথাযথ মূল্য পাবে না। তাছাড়া বাংলাদেশে হাদিসে উল্লেখিত বস্তুগুলো খাদ্য হিসেবেও ব্যবহার হয় না।
সুতরাং আপনি যদি হাদিসে বর্ণিত বস্তুগুলো দিয়ে ফিতরা আদায় করেন তাহলে তা উত্তম হবে, সুন্নত হবে। আর যদি টাকা দিয়ে আদায় করেন তাহলে গরিব ব্যক্তিটি বেশি উপকৃত হবে। তার জন্য তার প্রয়োজনীয় জিনিস ক্রয় বা প্রয়োজনীয় খাতে ব্যয় করা সহজ হবে। একারণে অনেক সাহাবী ও তাবেয়ী থেকেও পাওয়া যায় যে, তারা হাদিসে বর্ণিত বস্তুগুলোর মূল্য দিয়ে ফিতরা আদায় করেছেন। তাবেয়ি আবু ইসহাক (রহ.) বলেন,
عَنْ زُهَيْرٍ، قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا إِسْحَاقَ، يَقُولُ: أَدْرَكْتُهُمْ وَهُمْ يُعْطُونَ فِي صَدَقَةِ رَمَضَانَ الدَّرَاهِمَ بِقِيمَةِ الطَّعَامِ
‘আমি সাহাবায়ে কেরামকে পেয়েছি যে, তারা রমজানের সদকায়ে ফিতর খাদ্যের মূল্য দ্বারা পরিশোধ করতেন।’ [মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা, হাদিস: ১০৩৭১]
সুতরাং আপনি যেটি দিয়েই আদায় করুন, আদায় হয়ে যাবে।
রদ্দুল মুহতার ২/৩৬৭, বাদায়েউস সানায়ে ২/২০৮
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم