প্রশ্ন
আমি শুনেছি হাদিসে নাকি আছে, তিন দিনের বেশি কোনো মুসলমানের সাথে কথা বলা বন্ধ রাখা হারাম। কিন্তু আমাদের এলাকার এক বিদআতী ব্যক্তি রয়েছে। আমার সাথে দেখা হলেই সে বিদআতের দিকে ডাকতে থাকে। তাই তার ফিতনা থেকে দূরে থাকার জন্য তার সাথে কয়েকদিন ধরে কথা বলি না। আমি জানতে চাচ্ছি, আমার এ কাজটি কি হারাম হচ্ছে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
কোনো মুসলমানের সাথে তিন দিনের বেশি কথা বলা বন্ধ রাখা হারাম।
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, তোমরা পরস্পর সম্পর্কচ্ছেদ করো না, একে অন্যের বিরুদ্ধে শত্রুভাবাপন্ন হয়ো না, পরস্পরের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ পোষণ করো না, পরস্পর হিংসা করো না। তোমরা আল্লাহর বান্দা, ভাই ভাই হয়ে যাও। কোনো মুসলিমের জন্য তার ভাইয়ের সঙ্গে তিন দিনের বেশি কথাবার্তা বলা বন্ধ রাখা বৈধ নয়।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০৫৬; সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৫৫৯]
তবে ধর্মীয় বিষয়ের কারণে তিন দিনের বেশি কথা বলা বন্ধ রাখা উলামায়ে কেরামের নিকট বৈধ। ইবনে রজব হাম্বলী (রহ.) লেখেন,
وكل هذا في التقاطع للأمور الدنيوية ، فأما لأجل الدين : فتجوز الزيادة على الثلاثة
‘আর (হাদিসে যে বলা হয়েছে, কোনো মুসলিম ভাইয়ের সঙ্গে তিনদিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা জায়েয নয় ইত্যাদি)- এ সকল নিষেধ দুনিয়াবি উদ্দেশ্যের ক্ষেত্রে। দীনি কোনো উদ্দেশ্য থাকলে তখন তিন দিন ছাড়িয়ে যাওয়া জায়েয।’ [জামিউল উলূম ওয়াল হিকাম পৃ. ৩৩১]
তাই ধর্মীয় বিষয় হওয়ার কারণে আপনার জন্য তিন দিনের বেশি কথা বন্ধ রাখা বৈধ হয়েছে। সুতরাং এক্ষেত্রে আপনার কোনো গুনাহ হবে না। তবে উত্তম হল, কথা বন্ধ না রেখে তাকে বেশি বেশি করে কুরআন হাদিসের আলোকে নম্র ভাষায় বুঝানো। যেন সে তার বিদআতী কর্মকাণ্ড ত্যাগ করে সহিহ পথে ফিরে আসে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم