প্রশ্ন
বর্তমানে ফেসবুকে কিছু ভাইদেরকে দেখা যায়, তারা অমুসলিমদের উপাস্যদের গালমন্দ করে। এতে তাদের মন আরও বেশি বিগড়ে যায়। এবং তারাও আল্লাহ ও রাসূলকে নিয়ে কটু কথা বলে। এ ব্যাপারে ইসলামি শরিয়ত কী বলে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
অমুসলিমদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দিতে হবে হিকমতের সাথে ও নম্রভাষায়। এর বিপরীতে যদি তাদের উপাস্যদের গালিগালাজ করা হয় তাহলে এতে হিতে বিপরীত হবে। একারণেই কুরআন হাদিসে তাদের উপাস্যদের গালিগালাজ করতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং, অমুসলিমদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের উপাস্যদের গালিগালাজ করা যাবে না।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে ইরশাদ করেন,
وَ لَا تَسُبُّوا الَّذِیۡنَیَدۡعُوۡنَ مِنۡ دُوۡنِ اللّٰہِ فَیَسُبُّوا اللّٰہَ عَدۡوًۢا بِغَیۡرِ عِلۡمٍ ؕ کَذٰلِکَ زَیَّنَّا لِکُلِّ اُمَّۃٍ عَمَلَہُمۡ ۪ ثُمَّ اِلٰی رَبِّہِمۡ مَّرۡجِعُہُمۡ فَیُنَبِّئُہُمۡ بِمَا کَانُوۡا یَعۡمَلُوۡنَ
‘আর তোমরা তাদেরকে গালমন্দ করো না, আল্লাহ ছাড়া যাদেরকে তারা ডাকে, ফলে তারা গালমন্দ করবে আল্লাহকে, শত্রুতা পোষণ করে অজ্ঞতাবশত। এভাবেই আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য তাদের কর্ম শোভিত করে দিয়েছি। তারপর তাদের রবের কাছে তাদের প্রত্যাবর্তন। অতঃপর তিনি জানিয়ে দেবেন তাদেরকে, যা তারা করত।’ [সূরা আনআম, আয়াত: ১০৮]
অন্য আয়াতে ইরশাদ হচ্ছে,
وَ مَنۡ اَحۡسَنُ قَوۡلًا مِّمَّنۡ دَعَاۤ اِلَی اللّٰہِ وَ عَمِلَ صَالِحًا وَّ قَالَ اِنَّنِیۡ مِنَ الۡمُسۡلِمِیۡنَ۞وَ لَا تَسۡتَوِی الۡحَسَنَۃُ وَ لَا السَّیِّئَۃُ ؕ اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ فَاِذَا الَّذِیۡ بَیۡنَکَ وَ بَیۡنَہٗ عَدَاوَۃٌ کَاَنَّہٗ وَلِیٌّ حَمِیۡمٌ
‘আর তার চেয়ে কার কথা উত্তম, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সৎকর্ম করে এবং বলে, অবশ্যই আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত?আর ভাল ও মন্দ সমান হতে পারে না। মন্দকে প্রতিহত কর তা দ্বারা যা উৎকৃষ্টতর, ফলে তোমার ও যার মধ্যে শত্রুতা রয়েছে সে যেন হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।’ [সূরা হা মিম সাজদা, আয়াত: ৩৩-৩৪]
হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আয়েশা (রা.) হতে বর্ণিত। একবার একদল ইয়াহূদী রাসূল (সা.) এর নিকট এসে বলল: আসসামু আলাইকুম(তোমার মরণ হোক)। আয়েশা (রা.) বললেন: তোমাদের উপরই এবং তোমাদের উপর আল্লাহর লানত ও গযব পড়ুক। তখন রাসূল (সা.) বললেন: হে আয়েশা, একটু থামো। নম্রতা অবলম্বন করা তোমাদর কর্তব্য। রূঢ়তা ও অশালীনতা বর্জন করো। আয়েশা (রা.) বললেন: তারা যা বলেছে, তা কি আপনি শোনেননি? তিনি বললেন: আমি যা বললাম, তুমি কি তা শোননি? কথাটি তাদের উপরই ফিরিয়ে দিয়েছি। সুতরাং তাদের ব্যাপারে (আল্লাহর কাছে) আমার কথাই কবুল হবে আর আমার সম্পর্কে তাদের কথা কবুল হবে না।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬০৩০]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم