প্রশ্ন
আমি একজন হাফেজে কুরআন। আমার বয়স ১৫ বছর। গত রমযান মাসে আমার বোনের বাড়িতে বোনসহ তার কয়েকজন প্রতিবেশী মহিলাকে নিয়ে আমি তারাবীর নামায পড়াই। আমি দাঁড়াতাম বাহিরে। মহিলারা থাকত পর্দার ভেতরে। উল্লেখ্য যে, বোনের বাড়িতে জামাতের আয়োজন থাকায় এমন কিছু মহিলা তারাবীর নামাযে অংশগ্রহণ করেছে যারা একাকী ফরয নামাযও পড়ে না। অন্যান্য ক্ষেত্রে পর্দার বিষয়ে যেভাবেই থাকুক না কেন নামাযে আসা-যাওয়ার সময় মহিলারা যথাসাধ্য পর্দার প্রতি গুরুত্বারোপ করত। এভাবে দূর দূরান্ত থেকেও কিছু মহিলা জামাতে হাজির হত। পরবর্তীতে এলাকার আলেমদের মাঝে এ নিয়ে মতানৈক্য শুরু হয়। কেউ বলেন, মহিলাদের জন্য জামাতের আয়োজন করা মাকরূহ। কেউ বলেন, মাকরূহ নয়; জায়েয। আমার জানার বিষয় হল, উক্ত বিষয়ে শরীয়তের সঠিক সমাধান কী? দলীল-প্রমাণসহ জানালে চিরকৃতজ্ঞ হব।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
তারাবীর জামাতের জন্য মহিলাদেরকে বিভিন্ন জায়গা থেকে একত্রিত করা শরীয়তের দৃষ্টিতে একেবারে অপছন্দনীয়। ফরয নামাযের জামাতের বিশেষ গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ (সা.) মহিলাদের নিজ ঘরের অভ্যন্তরে নামায আদায় করাকে অধিক উত্তম ও সওয়াবের কাজ বলেছেন। হাদিসে এসেছে, হযরত উম্মে হুমাইদ (রা.) রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি আপনার সাথে নামায পড়তে পছন্দ করি। রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, আমি জানি, তুমি আমার সাথে নামায পড়তে পছন্দ কর। কিন্তু তোমার জন্য গৃহাভ্যন্তরে নামায পড়া বাহিরের কামরায় নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। আর বাহিরের কামরায় নামায পড়া বাড়ির চৌহদ্দির ভেতরে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। আর বাড়ির চৌহদ্দির ভেতরে নামায পড়া মহল্লার মসজিদে নামায পড়ার চেয়ে উত্তম। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৭০৯০)
এছাড়া সাহাবায়ে কেরামের অনেকেই ফরয নামাযের জামাতে মহিলাদের অংশগ্রহণ করতে নিরুৎসাহিত করেছেন। ফরয নামাযের জামাতে মহিলাদেরকে এত নিরুৎসাহিত করা হলে তারাবীর ক্ষেত্রে শরীয়তের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে তা সহজেই অনুমান করা যায়।
সুতরাং বিভিন্ন বাসা থেকে কোনো বাড়িতে বা মসজিদে মহিলাদের তারাবীর জামাতের জন্য একত্রিত হওয়া কিছুতেই উচিত নয়। মহিলাদের জন্য নিজ নিজ ঘরে একাকী তারাবী পড়াই উত্তম।
প্রকাশ থাকে যে, আপনার বোন এবং আপনার অন্য কোনো মাহরাম আত্মীয়া সেখানে থাকলে তারা চাইলে ঘরোয়াভাবে আপনার পিছনে তারাবী পড়তে পারবে। কিন্তু কোনো ভিন্ন মহিলাকে বাহির থেকে আসতে দেয়া ঠিক হবে না।
-সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫৭১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৮৯; বাদায়েউস সনায়ে ১/৬১৭; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫৬৬-৫৬৭
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم