প্রশ্ন
একদিন আমার স্ত্রীর সাথে একটি বিষয় নিয়ে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে আমি রাগের মাথায় তার সাথে এই বলে কসম করে ফেলি যে, আমি কোনোদিন তোমার সাথে মেলামেশা করব না। অতপর এক সপ্তাহ বাড়িতেই আলাদা ঘরে ছিলাম। কিন্তু সেই বিষয়টি নিয়ে আবার ঝগড়া হলে আমি ঢাকায় বোনের বাসায় চলে আসি এবং পাঁচ মাস যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রাখি। এর মধ্যে বিষয়টি পারিবারিকভাবে মীমাংসা হলে আমি বাড়ি ফিরে যাই। এখন হুজুরের নিকট জানতে চাচ্ছি, আমি এই কসম থেকে কীভাবে নিষ্কৃতি পাব? এবং কসমের কাফফারা কীভাবে আদায় করব?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
স্ত্রীর সাথে মেলামেশা না করার কসম করার পর চারমাস বিরত থাকলে স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়ে যায়। প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে কসম করার পর আপনারা যেহেতু ৪ মাসের অধিক সময় মেলামেশা থেকে বিরত ছিলেন। তাই আপনার স্ত্রীর উপর এক তালাকে বায়েন পতিত হয়ে আপনাদের বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গেছে। এখন আপনারা উভয়ে একত্রে সংসার করতে চাইলে দুটি কাজ করতে হবে। প্রথমত, নতুনভাবে মহর ধার্য করে দুইজন সাক্ষীর সামনে পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে।
দ্বিতীয়ত, আপনার কর্তব্য হল, বিবাহের পর পরই স্ত্রীর সাথে একত্রিত হয়ে অর্থাৎ মেলামেশা করে কসমটি ভেঙ্গে ফেলা। অতপর কসমের কাফফারা আদায় করা। বিবাহের পর যদি আবার চার মাস স্ত্রীর থেকে দূরে থাকা হয় তাহলে পূর্বোক্ত কসমের কারণে আবারো তালাকে বায়েন পতিত হয়ে যাবে। এ জন্য সময় ক্ষেপণ না করে স্ত্রীর সাথে মিলিত হতে হবে। কসমের কাফফারা হল, দশজন মিসকীনকে দু’বেলা তৃপ্তিসহকারে খাবার খাওয়ানো বা দু’বেলা খাবারের মূল্য দিয়ে দেওয়া অথবা তাদের প্রত্যেককে একজোড়া পরিধেয় বস্ত্র দেওয়া। আর এগুলোর সামর্থ্য না থাকলে ধারাবাহিকভাবে তিনদিন রোযা রাখা।
উল্লেখ্য যে, পুনরায় পরস্পর বিয়ে হলে আপনি মাত্র দুই তালাকের অধিকারী থাকবেন। সুতরাং এরপর দুই তালাক দিলেই উক্ত স্ত্রী আপনার জন্য সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে নতুন বিবাহ করারও কোনো সুযোগ থাকবে না। তাই এ ব্যপারে খুব সতর্ক থাকতে হবে।
-সূরা বাকারা, আয়াত: ২২৬-২২৭; সূরা মায়েদা, আয়াত: ৮৯; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হাদিস: ১১৬০৩; ফাতহুল কাদীর ৪/৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/৪৭৬; বাদায়েউস সনায়ে ৩/২৮১; আলমাবসূত, সারাখসী ৭/১৯, ৩০; মাজমাউল আনহুর ২/২৬৫
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم