প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় এক ব্যক্তি আপন শ্যালিকাকে বিয়ে করে ঢাকায় গিয়ে আত্মগোপন করে। এক মাস পরে তার স্ত্রী এই খবর শুনে স্ট্রোক করে মারা যায়। গত পাঁচ মাস পূর্বে ঐ ব্যক্তি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। এরপর পারিবারিকভাবে সমঝোতার মাধ্যমে তাদেরকে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। লোকটির আগের সংসারে দুই ছেলে এবং এক মেয়ে সন্তান রয়েছে। তার বাবা-মা অনেক আগেই ইন্তেকাল করেছেন। এখন তার ভাইয়েরা চাচ্ছে, তার সন্তানদের মাঝে তার সম্পত্তি বণ্টন করে দিতে। আমাদের মসজিদের ইমাম সাহেব বললেন, দ্বিতীয় স্ত্রী সম্পত্তি থেকে কোনো অংশ পাবে না। তাই হযরতের নিকট বিষয়টির সঠিক সমাধান কামনা করছি। সাথে সাথে তাদের সম্পত্তির বণ্টন-হিসাবও জানতে চাচ্ছি।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত অবস্থায় মৃতের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী মীরাস পাবে না। শরীয়তের দৃষ্টিতে সে তো মৃতের স্ত্রীই নয়। কেননা স্ত্রী বিবাহ বন্ধনে থাকাবস্থায় তার সহোদরা বোনকে বিবাহ করা হারাম। কুরআনুল কারীমে সুস্পষ্টভাবে তা নিষেধ করা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় জনের সাথে বিবাহ হারাম হলেও যেহেতু বিবাহ বন্ধনের মাধ্যমে তাদের মাঝে দৈহিক সম্পর্ক স্থাপিত হয়েছে তাই সে মহরের অধিকারী হবে। অতএব মহর আদায় না হয়ে থাকলে মীরাস থেকে প্রথমে মহর আদায় করে দিতে হবে। তবে সে ধার্যকৃত মহর ও মহরে মিছিলের মধ্যে যেটা কম সেটা পাবে।
তার সম্পত্তি বণ্টনের আগে তার কোনো ঋণ থাকলে তার মালিকানাধীন সমুদয় সম্পত্তি থেকে প্রথমে তা আদায় করতে হবে। অতপর তার কোনো বৈধ অসিয়ত থাকলে অবশিষ্ট সম্পত্তির এক তৃতীয়াংশ দ্বারা তা আদায় করতে হবে। অতপর তার রেখে যাওয়া স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি জীবিত ওয়ারিশদের মাঝে নিম্নে বর্ণিত শতকরা হারে বণ্টিত হবে।
১. স্ত্রী ১২.৫%
২. দুই ছেলে প্রত্যেকে ৩৫% করে।
৩. মেয়ে ১৭.৫%।
-সূরা নিসা, আয়াত: ২৩; আহকামুল কুরআন, জাস্সাস ২/১৩০; বাদায়েউস সানায়ে ২/৬১৫, ৫৪০; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২৭৭; কিতাবুল আছল ১০/১৮২; আলবাহরুর রায়েক ৩/১৬৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم