প্রশ্ন
আমি আমাদের এলাকার ‘উদয়ন সমবায় সমিতির’ একজন সদস্য। আমাদের সমিতিতে বেশ কিছু টাকা জমা হলে কোষাধ্যক্ষ সাহেবকে মুযারাবার ভিত্তিতে ব্যবসার জন্য ৫ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। তিনি প্রথমে আগ্রহ দেখালেও পরে ঝামেলা হবে ভেবে রাজি হচ্ছিলেন না। তাই সমিতির সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, তিনি যেভাবে ইচ্ছা সেভাবেই ব্যবসা পরিচালনা করবেন, ব্যবসার উপকারার্থে যে কোনো সিদ্ধান্ত তিনি নিবেন- এতে কারো আপত্তি থাকবে না। তিনি (একথা ভেবে যে, ব্যবসায় তার অভিজ্ঞতা নেই তাই লাভ না হতে পারে) তার এক আমানতদার বন্ধুকে সমিতির টাকা মুদারাবা চুক্তিতে দুই বছরের জন্য দিয়ে দেন। শতকরা হারে লাভের ৩০% সে পাবে ৭০% সমিতি পাবে। এক্ষেত্রে বিষয়টি তিনি দু-একজনের সাথে মৌখিকভাবে আলোচনা করলেও আনুষ্ঠানিকভাবে সকলের থেকে অনুমতি নেননি। ঘটনাটি জানাজানি হলে অনেক সদস্য এতে অসন্তুষ্ট হন। তারা টাকা ফিরিয়ে নেয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। বিষয়টি নিয়ে অনেক ঝামেলা হচ্ছে। সভাপতি চাচ্ছেন কোনোভাবে চলতি বছর শেষ করতে। কিন্তু অন্যান্যরা এখনই টাকা ফিরিয়ে আনার দাবি জানাচ্ছেন। হযরতের কাছে জানার বিষয় হল, নিজে ব্যবসা না করে এভাবে অন্যের সাথে চুক্তি করা কি জায়েয হয়েছে? সদস্যদের অভিযোগের কারণে এখনই তিনি চুক্তি ভঙ্গ করতে বাধ্য কি না? এক্ষেত্রে এক বছর শেষ করার দাবি কি শরীয়তসম্মত? এ সময় ব্যবসায় কোনো লোকসান হলে এর দায়ভার কে নিবে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে যেহেতু ঐ ব্যক্তিকেই মুদারাবা ব্যবসা করার জন্য টাকা দেওয়া হয়েছিল তাই সমিতির সদস্যদের অনুমতি ছাড়া তার জন্য অন্যজনের সাথে মুদারাবা চুক্তি করা সহিহ হয়নি। এখন সদস্যরা এতে আপত্তি জানালে তাকে টাকা ফিরিয়ে দিতে হবে। বছরের শেষ পর্যন্ত চুক্তি বহাল রাখার সুযোগ নেই। অবশ্য যেহেতু সে অন্যজনের সাথে চুক্তি করে ফেলেছে এবং তা ব্যবসায়িক স্বার্থেই করেছে তাই সমঝোতার ভিত্তিতে তাকে কিছু সময় দেওয়া উচিত। আর লোকটি যেহেতু সমিতির সদস্যদের অনুমতি ছাড়া এমনটি করেছে তাই ব্যবসায় কোনো লোকসান হলে এর ক্ষতিপূরণ তাকে একাই বহন করতে হবে।
-মাজাল্লাতুল আহকামিল আদলিয়্যাহ, মাদ্দাহ ১৪১৫; আলমুহীতুল বুরহানী ১৮/১৭৬; শরহুল মাজাল্লাহ ৪/৩৪৪; রদ্দুল মুহতার ৫/৬৪৯; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১৫/৪৩১
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم