প্রশ্ন
গত ঈদে আমি চাচার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলাম। আলোচনার একপর্যায়ে চাচা বললেন, তোমাকে একটা বিষয় বলে রাখছি। তা হল, আমার জানাযার নামায বড় ছেলে রাশেদ পড়াবে। সে যদি না পড়ায় তাহলে তুমি পড়াবে।
উল্লেখ থাকে যে, আমার জানা মতে রাশেদ ভাইয়ের কুরআন পড়া সহিহ-শুদ্ধ নয় এবং সে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাযও পড়ে না। এমনকি তার দাড়িও নেই এবং সে দেওয়ানবাগীর মুরিদ ও তার আকীদার প্রচারক। এমতাবস্থায় আমার জানার বিষয় হল-
১. ইমাম হওয়ার জন্য কী কী গুণাগুণ বা বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়োজন?
২. সে জানাযার নামায পড়াতে পারবে কি না?
৩. তার ইমামতি যদি জায়েয না হয় তাহলে জানাযায় উপস্থিত হাফেজ আলেম ও সাধারণ দ্বীনদার শ্রেণীর করণীয় কী হবে? কুরআন-সুন্নাহর আলোকে দলীল-প্রমাণসহ দিকনির্দেশনাদানে জনাব মুফতী সাহেবের প্রতি বিনীত অনুরোধ রইল।
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
শরীয়তে ইমামতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। অন্যান্য নামাযের ন্যায় জানাযার নামাযের ইমামতির জন্যও ইমামের সহিহ আকীদা-বিশ্বাসের অধিকারী হওয়া এবং কবীরা গুনাহে জড়িত না থাকা আবশ্যক। কোনো ভ্রান্ত আকীদার অনুসারী বিদআতী বা প্রকাশ্যে গোনাহের কাজে লিপ্ত ব্যক্তিকে জানাযার নামাযের ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া শরীয়তসম্মত নয়।
অতএব প্রশ্নোক্ত লোকটি যদি বাস্তবেই নিয়মিত ফরয নামায আদায় না করে অথবা বিদআতী গোমরাহ পীরের আকীদা-বিশ্বাসের অনুসারী ও প্রচারক হয় তাহলে এমন ব্যক্তিকে জানাযায় ইমামতির দায়িত্ব দেওয়া সহিহ হবে না। এক্ষেত্রে পিতা ওসিয়ত করলেও সে ইমামতির হকদার হবে না। এমন ব্যক্তির জন্য পিতা ইমামতির ওসিয়ত করে গেলেও তার উপর আমল করা যাবে না; বরং উপস্থিত লোকদের মধ্যে উপযুক্ত দ্বীনদার ব্যক্তির মাধ্যমে জানাযা পড়াতে হবে।
-মুসতাদরাকে হাকেম, হাদিস: ৫০৩৪; ফাতহুল কাদীর ২/৮৩; তাবয়ীনুল হাকায়েক ১/৩৪৫; আননাহরুল ফায়েক ১/৩৯; আলমুগনী, ইবনে কুদামা ৩/৪০৬
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم