প্রশ্ন
আমাদের দেশে জমি বন্ধক দেয়ার যে পদ্ধতি প্রচলিত আছে যে, কোনো ব্যক্তি একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকার বিনিময়ে কারো কাছ থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জমি বন্ধক নিয়ে থাকে। সাধরণত কত বছরের জন্য বন্ধক নেয়া হল তা উল্লেখ থাকে না। টাকা প্রদানকারী জমি ভোগ করতে থাকে। এভাবে দু-চার বছর চলে যায়। এরপর জমির মালিক টাকা প্রদানকারীর মূল টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নিজের জমি ফিরিয়ে নেয়। এ পদ্ধতি জায়েয আছে কি? যদি টাকা প্রদানকারী এরূপ শর্ত করে নেয় যে, বছরে বছরে তার টাকা থেকে ৫০০/১০০০ টাকা বা ৫% কিংবা ১০% টাকা কাটা যাবে তাহলে কি জায়েয হবে?
উত্তর
بسم الله الرحمن الرحيم
حامدا و مصليا و مسلما
ঋণ দিয়ে জমি বন্ধক রাখার প্রশ্নোক্ত পদ্ধতিটি জায়েয নয়। কেননা ঋণ দিয়ে বিনিময়ে বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়া সম্পূর্ণ নাজায়েয। মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক-এর এক বর্ণনায় এসেছে, ইবনে সীরীন (রাহ.) বলেন, এক ব্যক্তি আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)-এর নিকট এসে বললেন, এক লোক আমার নিকট একটি ঘোড়া বন্ধক রেখেছে, অতঃপর আমি তাতে আরোহণ করেছি। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বললেন-
مَا أَصَبْتَ مِنْ ظَهْرِهَا فَهُوَ رِبًا.
তুমি উক্ত ঘোড়ার উপর যে পরিমাণ আরোহণ করেছ তা সুদ হয়েছে। (মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, বর্ণনা: ১৫০৭১)
আর ঋণের অর্থ থেকে বছর প্রতি ৫০০/১০০০ টাকা কর্তন করার শর্ত করলেও তা জায়েয হবে না। কারণ বন্ধকী বস্তু থেকে উপকৃত হওয়ার জন্য নামমাত্র ভাড়া দিয়ে তার ভোগ-দখল একটি হিলা বা ছুতা মাত্র। সকলেই জানে যে, জমি মালিককে ঋণ না দেয়া হলে এত কম মূল্যে ভাড়া দিত না।
আর উক্ত লেনদেনে যে টাকা দেয়া হয় তা করয তথা ঋণ। আমানত নয়। আর সেই করয হাসিলের জন্যই বন্ধক নেয়া-দেয়া হয়ে থাকে।
-হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাদ্দুর ৪/২৩৬; বাদায়েউস সানায়ে ৫/২১২; রদ্দুল মুহতার ৬/৪৮২
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم