প্রশ্ন
জনৈক আলেমকে বলতে শুনলাম, দরূদে ইবরাহীম শুধু নামাযে পাঠ করতে হয়। নামাযের বাহিরে পাঠ করা নিষেধ। জানতে চাচ্ছি, তার কথা কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
দরূদ সমূহের মাঝে সর্বশ্রেষ্ঠ দরূদ হল দরূদে ইবরাহীম। উবনে হাজার আসকালানী (রহ.) বলেন,
واستدل بتعليمه صلى الله عليه وسلم لأصحابه الكيفية بعد سؤالهم عنها بأنها أفضل كيفيات الصلاة عليه؛ لأنه لا يختار لنفسه إلا الأشرف الأفضل، ويترتب على ذلك: لو حلف أن يصلي عليه أفضل الصلاة؛ فطريق البر أن يأتي بذلك
‘সাহাবায়ে কেরাম কর্তৃক জিজ্ঞাসা করা ও রাসূল (সা.) কর্তৃক তাঁদেরকে শিক্ষা দেওয়াটাই প্রমাণ বহন করে যে, এটাই রাসূল (সা.)-এর উপর দরূদ পাঠ করার সর্বোত্তম পন্থা। রাসূল (সা.)-এর নিজের জন্য সর্বোত্তম ও সর্বশ্রেষ্ঠ দরূদ পছন্দ করাটাই স্বাভাবিক।’ [ফাতহুল বারী ১১/১৬৬]
তাছাড়া হাদিস শরিফে এসেছে,
سَمِعَ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ أَبِي لَيْلَى قَالَ لَقِيَنِي كَعْبُ بْنُ عُجْرَةَ فَقَالَ: أَلَا أُهْدِي لَكَ هَدِيَّةً سَمِعْتُهَا مِنَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم؟ فَقُلْتُ: بَلَى، فَأَهْدِهَا لِي، فَقَالَ: سَأَلْنَا رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْنَا: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَيْفَ الصَّلَاةُ عَلَيْكُمْ أَهْلَ الْبَيْتِ، فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ عَلَّمَنَا كَيْفَ نُسَلِّمُ عَلَيْكُمْ؟ قَالَ: (قُولُوا: اللَّهُمَّ صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا صَلَّيْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ، وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ، اللَّهُمَّ بَارِكْ عَلَى مُحَمَّدٍ وَعَلَى آلِ مُحَمَّدٍ، كَمَا بَارَكْتَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ وَعَلَى آلِ إِبْرَاهِيمَ، إِنَّكَ حَمِيدٌ مَجِيدٌ
‘আবদুর রহমান ইবনু আবূ লাইলা (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কা‘ব ইবনু উজরা (রাঃ) আমার সঙ্গে দেখা করে বললেন, আমি কি আপনাকে এমন একটি হাদিয়া দেব না যা আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে শুনেছি? আমি বললাম, হাঁ, আপনি আমাকে সে হাদিয়া দিন। তিনি বললেন, আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাদের উপর অর্থাৎ আহলে বাইতের উপর কিভাবে দরূদ পাঠ করতে হবে? কেননা, আল্লাহ তো (কেবল) আমাদেরকে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা কিভাবে আপনার উপর সালাম করব। তিনি বললেন, তোমরা এভাবে বল, ‘‘হে আল্লাহ! আপনি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করুন, যেরূপ আপনি ইবরাহীম (আঃ) এবং তাঁর বংশধরদের উপর রহমত বর্ষণ করেছেন। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অত্যন্ত মর্যাদার অধিকারী। হে আল্লাহ! মুহাম্মাদ এবং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরদের উপর তেমনি বরকত দান করুন যেমনি আপনি বরকত দান করেছেন ইবরাহীম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ)-এর বংশধরদের উপর। নিশ্চয়ই আপনি অতি প্রশংসিত, অতি মর্যাদার অধিকারী।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩৭০]
উক্ত হাদিসে নামাযেই তা পাঠ করতে হবে এমন কোনো কথা বলা হয়নি। কাজেই নামাযের বাহিরেও তা পাঠ করা যাবে। শরিয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো সমস্যা নেই।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم