প্রশ্ন
আমাদের গ্রামের নিয়ম হল, গ্রামের সবাই তো আর কুরবানী করতে পারে না, তাই যারা কুরবানী করবে, তারা তাদের মাংসের নির্দিষ্ট একটি অংশ গ্রামের সমাজপতির কাছে জমা দিবে। সমাজের দায়িত্বশীলরা সেগুলো গ্রামের সকল মানুষের মাঝে বণ্টন করে দিবে। যারা কুরবানী দেয়নি, তারা যেন কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়, তাই এই নিয়ম করা হয়েছে। জানতে চাচ্ছি, শরিয়তের দৃষ্টিতে এতে কোনো সমস্যা আছে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
প্রথমে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে, শরিয়তে যে কুরবানীর গোশত ৩ ভাগে বণ্টন করার কথা বলা হয়েছে তা মুস্তাহাব। জরুরি কোনো বিষয় নয়। সুতরাং ৩ ভাগে বণ্টন না করলেও কোনো সমস্যা হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন,
فَكُلُواوَادَّخِرُواوَتَصَدَّقُوا
‘(কুরবানির গোশত) তোমরা খাও, জমা করে রাখো এবং (গরীব-অসহায়দেরও) দান করো।’ [সহিহ মুসলিম হাদিস: ১৯৭১]
তবে স্বাভাবিক অবস্থায় কুরবানির গোশত ৩ ভাগে বণ্টন করা উত্তম। কারণ রাসূল (সা.) কুরবানির গোশত ৩ ভাগে বণ্টন করতেন। হাদিস শরিফে এসেছে,আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে,
‘রাসূল (সা.) তার কুরবানীর গোশতের তিন ভাগের একভাগ পরিবার-পরিজনকে দিতেন। আরেক ভাগ গরিব প্রতিবেশীদের দিতেন এবং একভাগ ভিক্ষুক ও অসহায়দের দান করতেন।’ [আল মুগনী ১৩/৩৭৯]
কিন্তু বর্তমানে সমাজপতির নির্দেশে যেভাবে মাংস সংগ্রহ করে সমাজের সকল মানুষকে বণ্টন করে দেওয়া হয় তা বৈধ নয়। কারণ এতে অনেক সময় দাতাদের সন্তুষ্টি পাওয়া যায় না। আর হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন-
لَا يَحِلُّ مَالُ امْرِئٍ إِلَّا بِطِيبِ نَفْسٍ مِنْهُ
‘কারও সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যতিরেকে অন্যের জন্য বৈধ নয়।’ [মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২০৬৯৫]
কাজেই এ জাতীয় সামাজিক বণ্টন বৈধ নয়।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم