প্রশ্ন
একটি হাদিসে পড়লাম, রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ঘর পর্যন্ত পৌঁছার মত সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হজ্ব না করে তবে সে ইয়াহুদি হয়ে মারা যাক বা নাসারা হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহ তাআলার) কোনো ভাবনা নেই’। প্রশ্ন হল, হজ্ব না করলে কি ইয়াহুদি বা খৃস্টান হয়ে যাবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হজ্ব ফরজ হওয়ার সাথে সাথেই আদায় করে নেওয়া শরিয়তের নির্দেশ। ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় হজ্ব না করে থাকলে মৃত্যুকালে ওয়ারিশদের কাছে হজ্বের অসিয়ত করে যাওয়া তার দায়িত্ব। অসিয়ত না করে গেলে বড় ধরনের গোনাহগার হবে।
হ্জ্ব যেহেতু একটি ফরজ বিধান, তাই কেউ যদি হজ্ব ফরজ হওয়ার পর তা আদায় না করে তাহলে স্বাভাবিকভাবে তার পাকড়াও খুব কঠিন হবে। এ কারণে রাসূল (সা.) হাদিসে এমন ব্যক্তির জন্য কঠিন ভাষা ব্যবহার করেছেন। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন,
‘কোনো ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ঘর পর্যন্ত পৌছার মত সম্বল ও বাহনের অধিকারী হওয়ার পরও যদি হাজ্ব না করে তবে সে ইয়াহুদি হয়ে মারা যাক বা নাসারা হয়ে মারা যাক তাতে (আল্লাহ তাআলার) কোনো ভাবনা নেই। কারণ আল্লাহ তাআলা তার কিতাবে বলেন, ‘মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাবার সামর্থ্য আছে, আল্লাহ তাআলার উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ্ব করা তার অবশ্য কর্তব্য’।’ [সুনানে তিরমিযি, হাদিস: ৮১২]
তবে হজ্ব না করলে ইয়াহুদি বা নাসারা হয়ে যাবে বিষয়টি এমন নয়। বরং এ হাদিসের ব্যাখ্যায় মুহাদ্দিসিনগণ বলেন,
‘কেউ যদি হজ্বের ফরজিয়্যাতকে অস্বীকারকরত আদায় না করে তাহলে ইয়াহুদি-নাসারাদের মত সে কাফের হয়ে যাবে। আর যদি ফরজিয়্যাতকে স্বীকার করে আদায় না করে তাহলে ইয়াহুদি-নাসারাদের মত কাফের না হলেও হজ্ব আদায় না করার দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের মত হবে। কারণ তারাও হজ্ব আদায় করে না।’ [আল মাফাতিহ ফি শরহিল মাসাবিহ ৩/২৬০]
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم