প্রশ্ন
হায়েজের রক্ত বন্ধ হয়েছে মনে করে আমি স্ত্রী সহবাস করে ফেলি। কিন্তু সহবাসের পর আমার স্ত্রী সামান্য লাল রক্তের মত তরল দেখতে পায়। একমাস পর পরীক্ষা করে দেখতে পাই আমার স্ত্রী প্রেগনেন্ট। আমার স্ত্রী বলল, হায়েজ অবস্থায় সহবাসের কারণে গর্ভে সন্তান আসলে সে সন্তানে শয়তানের প্রভাব থাকে। জানতে চাচ্ছি, আসলেই কি উক্ত সন্তানে শয়তানের প্রভাব থাকবে?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা হারাম। পবিত্র কুরআনে স্পষ্টভাবে নিষেধ করা হয়েছে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُواْ النِّسَاء فِي الْمَحِيضِ وَلاَ تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىَ يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللّهُ إِنَّ اللّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
‘আর তারা তোমাকে হায়েজ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, তা কষ্ট। সুতরাং তোমরা হায়েজকালে স্ত্রীদের থেকে দূরে থাক এবং তারা পবিত্র না হওয়া পর্যন্ত তাদের নিকটবর্তী হয়ো না। অতঃপর যখন তারা পবিত্র হবে তখন তাদের নিকট আস, যেভাবে আল্লাহ তোমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন। নিশ্চয় আল্লাহ তাওবাকারীদেরকে ভালবাসেন এবং ভালবাসেন অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীদেরকে।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২২২]
কাজেই আপনার করণীয় হলো, আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে তওবা-ইস্তেগফার করা। পাশাপাশি উত্তম হল, এক বা অর্ধ দিনার সদকা করে দেওয়া। এক দিনার বর্তমানে ৪.৩৭৪ গ্রাম সমপরিমাণ স্বর্ণ। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: إِذَا كَانَ دَمًا أَحْمَرَ فَدِينَارٌ، وَإِذَا كَانَ دَمًا أَصْفَرَ فَنِصْفُ دِينَارٍ
‘ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসূল(সা.) বলেন, যখন রক্ত লাল থাকে তখন (সহবাস করলে) এক দিনার, আর যখন রক্ত পীতবর্ণ ধারণ করে তখন অর্ধ দিনার।’ [সুনানে তিরমিযী, হাদিস: ১৩৭]
তবে হায়েজ অবস্থায় সহবাসের কারণে গর্ভে বাচ্চা আসলে তাতে শয়তানের প্রভাব থাকে- এটি একটি ভিত্তিহীন কথা ও কুসংস্কার। বরং এখন আপনার করণীয় হল, আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দোয়া করা, যেন আল্লাহ তাআলা একটি সুস্থ বাচ্চা দান করেন।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم