প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় এক যুবক আত্মহত্যা করলে তাকে গোসল দেওয়া হবে কি না, তা নিয়ে মতভেদ দেখা দেয়। পরবর্তীতে গোসল দেওয়া ছাড়াই তাকে দাফন করা হয়। জানতে চাচ্ছি, এক্ষেত্রে সঠিক মাসআলা কোনটি ছিল?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
আত্মহত্যা করা কবীরা গুনাহের অন্তর্ভুক্ত। আত্মহত্যাকারী জাহান্নামী হবে। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে এক যুদ্ধে উপস্থিত ছিলাম। তখন তিনি ইসলামের দাবীদার এক ব্যক্তিকে লক্ষ্য করে বললেন, এ ব্যক্তি জাহান্নামী অথচ যখন যুদ্ধ শুরু হল, তখন সে লোকটি ভীষণ যুদ্ধ করল এবং আহত হল। তখন বলা হল, হে আল্লাহর রাসূল! যে লোকটি সম্পর্কে আপনি বলেছিলেন সে লোকটি জাহান্নামী, আজ সে ভীষণ যুদ্ধ করেছে এবং মারা গেছে। রাসূল (সা.) বললেন, সে জাহান্নামে গেছে। রাবী বলেন, একথার উপর কারো কারো অন্তরে এ বিষয়ে সন্দেহ সৃষ্টির উপক্রম হয় এবং তাঁরা এ সম্পর্কিত কথাবার্তায় রয়েছেন, এ সময় খবর এল যে, লোকটি মরে যায়নি বরং মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। যখন রাত্রি হল, সে আঘাতের কষ্টে ধৈর্যধারণ করতে পারল না এবং আত্মহত্যা করল। তখন রাসূল (সা.)-এর নিকট এ সংবাদ পৌঁছানো হল, তিনি বলে উঠলেন, আল্লাহু আকবার! আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আমি অবশ্যই আল্লাহ তাআলার বান্দা এবং তাঁর রাসুল। অতঃপর রাসূল (সা.) বিলাল (রা.)-কে আদেশ করলেন, তখন তিনি লোকদের মধ্যে ঘোষণা দিলেন যে, মুসলিম ব্যতীত কেউ বেহেশতে প্রবেশ করবে না। আর আল্লাহ তাআলা (কখনো কখনো) এই দ্বীনকে মন্দ লোকের দ্বারাও সাহায্য করেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩০৬২; সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১১১]
আত্মহত্যা মহাপাপ হলেও আত্মহত্যাকারীকে সাধারণ মৃতদের মতই গোসল দিতে হয়। তবে যেহেতু এটি একটি মহাপাপ তাই এরূপ ব্যক্তির গোসল, জানাজা ও দাফনে আলেম-ওলামা ও নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিগণ উপস্থিত হবেন না। যাতে অন্যদের জন্য এটি শিক্ষণীয় হয়।
কাজেই উক্ত ব্যক্তিকে গোসল ব্যতিত দাফন করা আপনাদের জন্য উচিত হয়নি।
বাদায়েউস সানায়ে ২/৪৭; তাতারখানিয়া ২/১৬২
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم