প্রশ্ন
আমি একজন কাপড় ব্যবসায়ী। বহুদিন যাবৎ এ ব্যবসায় নিয়োজিত। ব্যাংকের সাথে লেনদেন করি না সুদের সম্পৃক্ততার ভয়ে। একজন চাকরিজীবী অবসরপ্রাপ্ত পরবর্তী পেনশনের কিছু টাকা লাভ-ক্ষতির অংশীদারির ভিত্তিতে আমার ব্যবসায় বিনিয়োগ করেন। ৫/৬ বছর ব্যবসার লভ্যাংশ তাকে দেওয়া হয়। একদিন রাতে অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসার সমস্ত সম্পদসহ অন্যান্য গচ্ছিত সম্পদ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দোকানের কর্মচারী জানে বেঁচে গেলেও ছাই-কয়লা ছাড়া কিছুই বাকি নেই। এমতাবস্থায় ঐ লোকটি কি আমার কাছে টাকা পাবেন? শরিয়তের রায়ের প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আমাদের দুজনকে শরিয়তের রায় জানিয়ে বাধিত করবেন।
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
লাভ-লোকসানের ভিত্তিতে কারও ব্যবসায় টাকা বিনিয়োগ করাকে শরিয়তের ভাষায় মুশারাকা বলা হয়। এ ব্যবসার মূলধনের শতাংশ হারে অংশীদার ব্যক্তি লাভ বা লোকসান এর দায়িত্ব গ্রহণ করতে বাধ্য থাকবে।
সুতরাং ব্যবসার উন্নতি অবস্থায় যে চুক্তিতে লাভের অংশীদার হয়ে লাভ গ্রহণ করেছে তদ্রূপ ব্যবসা কেন্দ্রিক লোকসান ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া অবস্থায় অবশ্যই অংশীদার ব্যক্তি তার মূলধনের হারে ক্ষতির দায়িত্ব বহন করতে বাধ্য থাকবে।
তাই আপনি যে লোক থেকে যত টাকা বিনিয়োগের জন্য গ্রহণ করেছেন দোকান জ্বলে পুড়ে ছারখার হওয়ার দ্বারা যত টাকা লোকসান হয়েছে উভয় অংশীদার প্রত্যেকে মূলধনের হারে লোকসানের দায়ভার বহন করতে হবে।
উল্লেখ্য মুশারাকা পদ্ধতিতে পরিচালিত ব্যবসার লাভের হিসাব উভয়ের মাঝে চুক্তিভিত্তিক নির্ধারিত হলেও লোকসানের হিসাব উভয়ের মূলধনের হারে নির্ধারণ করা হবে।
আলী (রা.) বলেন, ‘শরিকানা চুক্তিতে লাভ উভয়ের সমঝোতার মাধ্যমে নির্ধারিত হবে। তবে ক্ষতি মূলধন অনুযায়ী নির্ধারিত হবে।’ [মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, বর্ণনা: ১৫০৮৭]
রদ্দুল মুহতার ৪/৩০৫, আলফাতাওয়াল হিন্দিয়া ২/৩২০
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم