প্রশ্ন
কুরআনে নুকতা, হরকত ইত্যাদি লাগানোর দ্বারা কি কুরআন বিকৃত হয়নি? কারণ, রাসূল (সা.)-এর যুগে তো এমন ছিল না!
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
রাসূল (সা.)-এর যুগে কুরআনের অক্ষরগুলোতে কোনো নুকতা ও হরকত ইত্যাদি লাগানো ছিল না। আরবের লোকেরা এগুলো ছাড়াই কুরআন পাঠ করতে পারতেন।
কিন্তু পরবর্তীতে যখন অনারবীরা দলে দলে মুসলমান হতে লাগল তখন তাদের জন্য কুরআন পাঠ করা কষ্টকর হয়ে গেল। সে সময় প্রসিদ্ধ তাবেয়ী আবুল আসওয়াদ দুয়ালী (রহ.) আলী (রা.)-এর নির্দেশক্রমে কুরআনের অক্ষরগুলোতে নুকতা যুক্ত করেন। যেন, অনারবীরা সহজে ও নির্ভুলে কুরআন পাঠ করতে পারে।
পরবর্তীতে আরবী ব্যাকরণ শাস্ত্রের ইমাম সিবওয়াইহ (রহ.)-এর উস্তাদ ইমাম খলিল ইবনে আহমাদ (রহ.) কুরআনের অক্ষরগুলোতে হরকত ও জযম যুক্ত করেন। তারপর ধীরে ধীরে তার ছাত্ররা এটাকে পূর্ণাঙ্গরূপ দান করেন।
বিকৃতি বলা হয় যা মূল থেকে পরিবর্তন হয়ে যায়। কুরআনের অক্ষরগুলোতে উক্ত কাজ করার কারণে রাসূল (সা.)-এর যুগে যে কুরআন নাজিল হয়েছিল তাতে কোনোরূপ পরিবর্তন সাধিত হয়নি। এর দ্বারা কুরআনের অর্থ বা শব্দেও কোনোরূপ পরিবর্তন আসেনি।
কাজেই একথা বলার কোনো সুযোগ নেই যে, উক্ত কাজ করার দ্বারা কুরআনের মাঝে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে।
তাছাড়া আল্লাহ তাআলা নিজেই কুরআন সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছেন। সেখানে পরিবর্তনের প্রশ্নই উঠে না। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
إِنَّا نَحْنُ نَزَّلْنَا الذِّكْرَ وَإِنَّا لَهُ لَحَافِظُونَ
‘নিশ্চয় আমি কুরআন নাযিল করেছি, আর আমিই তার হেফাযতকারী।’ [সূরা হিজর, আয়াত: ৯]
ফাজায়িলুল কুরআন, ইবনে কাসীর, পৃ. ১৪৯; মুহাযারাত ফি উলুমিল কুরআন, পৃ. ৮৪
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم