প্রশ্ন
নারীরা যদি ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে ঈদের নামাজ আদায় করে তাহলে তা শুদ্ধ হবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
নারীদের জন্য ঈদগাহে উপস্থিত হয়ে ঈদের নামাজে শরিক হওয়া মাকরূহ। কারণ, বর্তমানে নারীরা ঈদগাহে উপস্থিত হলে ফেতনার প্রবল আশঙ্কা দেখা দিবে। আর কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَالْفِتْنَةُ أَكْبَرُ مِنَ الْقَتْلِ
‘আর ফিতনা হত্যার চেয়েও বড়।’ [সূরা বাকারা, আয়াত: ২১৭]
তাছাড়া রাসূল (সা.)-এর হাদিস ও সাহাবায়ে কেরামের আমল দ্বারাও বুঝা যায় যে, নারীরা ঘরেই নামাজ পড়বে। ঈদগাহ বা মসজিদে উপস্থিত হবে না। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘আব্দুল্লাহ ইবনে সুওয়াইদ আল আনসারী (রহ.) তার চাচী উম্মে হুমাইদ (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, তিনি রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি আপনার পিছনে নামাজ পড়তে পছন্দ করি। রাসূল (সা.) বললেন, আমি জানি, তুমি আমার পিছনে নামাজ পড়তে পছন্দ কর। কিন্তু তোমার একান্ত গৃহে নামাজ পড়া তোমার সাধারণ ঘরে নামাজ পড়া থেকে উত্তম। তোমার সাধারণ ঘরে নামাজ পড়া তোমার বাড়িতে নামাজ পড়া থেকে উত্তম। তোমার বাড়িতে নামাজ পড়া তোমার মহল্লার মসজিদে নামাজ পড়া থেকে উত্তম। তোমার মহল্লার মসজিদে নামাজ পড়া আমার মসজিদে তোমার নামাজ পড়া থেকে উত্তম। তখন তিনি ঘরের লোকদের নির্দেশ দিলেন। তার জন্য ঘরের কোণে অন্ধকারাচ্ছন্ন স্থানে নামাজের জায়গা বানানো হল। তিনি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সেখানে নামাজ পড়েন।’ [সহিহ ইবনে খুজাইমা, হাদিস: ১৬৮৯; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৭০৯০]
আরেকটি হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) বলেন,
‘রাসূলুল্লাহ (সা.) যদি আজকের মহিলাদের এরূপ অবস্থা দেখতেন (যেমন সুগন্ধি লাগানো, বেপর্দা চলা), তাহলে অবশ্যই তিনি তাদেরকে মসজিদে যেতে নিষেধ করে দিতেন। যেরূপ নিষেধ করে দেয়া হয়েছিল বনী ইসরাঈলের মহিলাদের। বর্ণনাকারী ইয়াহইয়া বলেন, আমি আমরাহকে বললাম, বনী ইসরাঈলের মহিলাদের কি নিষেধ করা হয়েছিল? তিনি বললেন, হ্যাঁ।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৫৬৯]
আরেকটি হাদিসে এসেছে,
‘আবী আমর শায়বানী (রহ.) বলেন, তিনি ইবনে মাসউদ (রা.)-কে দেখেছেন যে, তিনি নারীদেরকে মসজিদ থেকে বের করে দিতেন এবং বলতেন, বাড়িতে যাও। এটিই তোমাদের জন্য উত্তম।’ [মুসান্নাফে আব্দুর রাযযাক, হাদিস: ৫২০১]
সুতরাং নারীরা ঈদগাহে উপস্থিত হবে না। তবে নারীদের জন্য যদি ভিন্ন ব্যবস্থা থাকে এবং তারা ঈদগাহে এসে নামাজ পড়ে তাহলে তাদের এ কাজটি মাকরূহ হলেও নামাজ হয়ে যাবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم