প্রশ্ন
আমার বিয়ের কথাবার্তা চলছে। মহররমের দশ তারিখ শুক্রবার হওয়ায় সেদিন বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট করি। আমার একজন আত্মীয় বললেন, মহররমের দশ তারিখে বিয়ে করা হারাম। কারণ, মহররমের দশ তারিখ শোক প্রকাশের দিন। আনন্দের দিন না। জানতে চাচ্ছি, তার কথা কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
মহররমের দশ তারিখ শোক প্রকাশের দিন- এটি শিয়া সম্প্রদায় কর্তৃক প্রচারিত একটি ধারণা মাত্র। কুরআন হাদিসের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। বরং হাদিসের আলোকে বুঝা যায় এদিন মুমিনদের জন্য আনন্দ প্রকাশের দিন। হাদিস শরিফে এসেছে,
عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ لَمَّا قَدِمَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْمَدِينَةَ وَجَدَ الْيَهُودَ يَصُومُونَ عَاشُورَاءَ فَسُئِلُوا عَنْ ذَلِكَ فَقَالُوا هَذَا الْيَوْمُ الَّذِي أَظْفَرَ اللَّهُ فِيهِ مُوسَى وَبَنِي إِسْرَائِيلَ عَلَى فِرْعَوْنَ وَنَحْنُ نَصُومُهُ تَعْظِيمًا لَهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ نَحْنُ أَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ ثُمَّ أَمَرَ بِصَوْمِهِ
‘আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল (সা.) মদীনায় হিজরত করার পর দেখলেন, ইহুদীরা আশুরার দিন রোজা রাখে। রাসূল (সা.) তাদেরকে রোজার কারণ জিজ্ঞাসা করলেন। তখন তারা বলেছিল, এটি মহিমান্বিত একটি দিন। এই দিনে মুসা (আ.) ও তার কওম নিস্তার পান। আর ফেরআউন ও তার দল ডুবে মারা যায়। সেই থেকে মুসা (আ.) শুকরিয়াস্বরূপ এই দিনে রোজা রাখতেন। সে হিসেবে আমরাও রোজা রাখি। তখন রাসূল (সা.) বললেন, মুসা (আ.)-এর ব্যাপারে তোমাদের চেয়ে আমরা অধিক হকদার। অতপর রাসূল (সা.) নিজেও রোজা রাখলেন এবং অন্যদেরকে রোজা রাখার নির্দেশ করলেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ৩৩৯০]
উক্ত হাদিস থেকে বুঝা যায়, মহররমের দশ তারিখ মূসা (আ.) জালেম সম্প্রদায় থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন, যা অবশ্যই আনন্দের বিষয়।
সুতরাং মহররমের দশ তারিখ বিয়ে করা যাবে না- এটি একটি মূর্খতা সুলভ বক্তব্য ছাড়া আর কিছুই নয়। বরং মহররমের দশ তারিখ বিয়ে করতে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা নেই।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم