প্রশ্ন
আমাদের গ্রামের এক ইমাম সাহেব হাইস্কুলে ছেলেমেয়েদেরকে একসাথে শিক্ষা দেন। সেখানে প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েরাও থাকে এবং তারা পর্দা করে না। আমি জানতে চাচ্ছি, এমন ইমামের পিছনে নামাজ পড়লে আমার নামাজ হবে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলামে ইমামের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। ইমাম হতে হয় পরহেজগার, মুত্তাকী ও আল্লাহভীরু। হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) বলেন:
‘যদি তোমরা চাও, তোমাদের নামায কবুল হোক তাহলে তোমাদের ইমাম যেন হয় তোমাদের সর্বোত্তম ব্যক্তি। কারণ ইমাম হল তোমাদের ও তোমাদের রবের মধ্যকার প্রতিনিধি।’ [মুসতাদরাকে হাকেম ৪/২৩৭]
আর এটি জানা কথা যে সহশিক্ষা ইসলামের পরিপন্থী। কুরআন মাজিদে আল্লাহ তাআলা বলেন-
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا
‘আর তোমরা তার (রাসূল সা.)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ।’ [সূরা আহযাব, আয়াত: ৫৩]
ইমাম কুরতুবী রহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। [তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬]
তাই মসজিদ কমিটির উচিৎ উক্ত ইমাম সাহেবকে সহশিক্ষার চাকরি ছেড়ে দিতে অনুরোধ করা। যদি তিনি ছেড়ে না দেন তাহলে তার স্থানে একজন মুত্তাকী ও আল্লাহভীরু ইমামকে নিয়োগ দেওয়া।
অবশ্য এমন ইমামের পিছনেও নামাজ পড়লে নামাজের ফরজ আদায় হয়ে যাবে।
ইলাউস সুনান ৪/৩৫২; বাদায়েউস সানায়ে ১/৩৮৭; ফাতহুল কাদীর ১/৩০৪; মারাকিল ফালাহ ১৬৫; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ১/৬০৩; শরহুল মুনইয়াহ ৫১৩
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم