প্রশ্ন
আমি একজন জেনারেল শিক্ষিতা মহিলা। ইসলামী শিক্ষার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও আগ্রহ রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমি যখন বিশেষ অসুস্থ (হায়েজ) অবস্থায় থাকি তখনও আমার স্বামী আমার সাথে মিলিত হওয়া থেকে বিরত থাকতে পারেন না। বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করা হলে তিনি বলেন, আমি তোমার চেয়ে ভালো জানি। এভাবে তার সঙ্গে আমার ১০/১২ বছর সংসার চলছে।
এখন আমি খুব অশান্তিতে আছি তাই দয়া করে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানালে উপকৃত হব।
ক. ঋতুস্রাব অবস্থায় স্ত্রী সহবাসের কোনো সুযোগ আছে কি?
খ. যদি তিনি সংশোধন হন তাহলে আমার বা তার ওপর কোনো কাফফারা ওয়াজিব হবে কি?
গ. আর যদি সংশোধন না হন তাহলে আমি কী করতে পারি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ক. কোরআন-হাদিসের সুস্পষ্ট ভাষ্যমতে হায়েয অবস্থায় স্ত্রী সহবাস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ, হারাম ও কবীরা গুনাহ। কাজেই আপনার স্বামীর জন্য কোনোভাবেই এর নেই।
আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজিদে বলেন,
وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّى يَطْهُرْنَ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ
‘ওরা তোমাকে মাসিকের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে। বলে দাও, এটা কষ্ট। তাই মাসিকের দিনগুলোতে নিজেদেরকে তাদের থেকে আলাদা রাখো। যতক্ষণ তারা পরিচ্ছন্ন হয়ে না যাচ্ছে, ততক্ষণ তাদের কাছে যাবে না।
তারপর যখন তারা নিজেদেরকে পরিচ্ছন্ন করে, তখন তাদের কাছে যাও, যেখানে যেতে আল্লাহ তোমাদেরকে আদেশ দিয়েছেন। আল্লাহ অবশ্যই তাদেরকে ভালোবাসেন, যারা বার বার তাঁর কাছে ক্ষমা চায়। তিনি তাদেরকে ভালোবাসেন যারা নিজেদেরকে সবসময় পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করে।’ [সূরা বাকারাহ, আয়াত: ২২২]
খ. না, উক্ত গুনাহের কারণে আপনাদের উপর কোনো কাফফারা ওয়াজিব হবে না।
গ. আপনার করণীয় হলো, স্বামীকে উক্ত বিষয়টি ভালোভাবে বুঝানো এবং আল্লাহর ভয় দেখানো। এবং সহবাস ছাড়া অন্য যা কিছু করা যায় তা করা। কিন্তু সহবাস করতে দেয়া আপনার জন্য কখনো জায়েয হবে না। কেননা গুনাহের কাজে স্বামীর আনুগত্য জায়েজ নয়। সেক্ষেত্রে তার বিরোধিতা করাই কর্তব্য।
রদ্দুল মুহতার ২/৩৯৯; আদদুররুল মুখতার ২/৩৯৯
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم