প্রশ্ন
কিছুদিন আগে আমাদের এলাকায় একজন বক্তা বেলাল (রা.)-এর ফজিলত বর্ণনা করতে গিয়ে বলে, বেলাল (রা.) শীন উচ্চারণ করতে পারতেন না। বরং শীনকে সীন উচ্চারণ করতেন। আজানে আশহাদু এর বদলে আসহাদু বলতেন। রাসূল (সা.) তখন বলেন, বেলালের সীন আল্লাহর কাছে শীন হিসেবে গণ্য হবে। প্রশ্ন হল, এই ঘটনাটি কি সঠিক?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
উল্লেখিত ঘটনাটি লোকমুখে প্রচলিত হলেও এর কোনো ভিত্তি নেই। বরং বেলাল (রা.) ছিলেন অত্যন্ত সুস্পষ্টভাষী ও উঁচু আওয়াজ বিশিষ্ট। আব্দুল্লাহ ইবনে যায়েদ (রা.) যখন আজানের শব্দগুলো স্বপ্নে দেখলেন, তখন রাসূল (সা.) তাকে লক্ষ্য করে বলেছিলেন,
فَقُمْ مَعَ بِلَالٍ فَأَلْقِ عَلَيْهِ مَا رَأَيْتَ فَلْيُؤَذِّنْ بِهِ فَإِنَّهُ أَنْدَى صَوْتًا مِنْكَ
‘তুমি উঠো, বেলালকে সাথে নিয়ে গিয়ে তুমি স্বপ্নে যা দেখেছো তা তাকে শিখিয়ে দাও, যেন সে (ঐভাবে) আজান দেয়। কারণ তার কণ্ঠস্বর তোমার কণ্ঠস্বরের চেয়ে উচ্চ।’ [সুনানে আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৯]
হাফেজ ইবনে কাসীর (রহ.) বেলাল (রা.)-এর জীবনী বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন,
‘তিনি অত্যন্ত সুস্পষ্টভাষী ছিলেন। কতক লোক যেমন ধারণা করে যে, তার শীন সীন হয়ে যেত তা ঠিক নয়। এমনকি কতক তো এ ব্যাপারে হাদিসও বর্ণনা করে যে, ‘বেলালের সীন আল্লাহর কাছে শীন’। অথচ রাসূল (সা.) থেকে এ জাতীয় কোনো হাদিসের ভিত্তি খুঁজে পাওয়া যায় না।’ [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া ৮/৩০৫]
অন্যান্য মুহাদ্দিসগণও উক্ত হাদিসকে ভিত্তিহীন বলেছেন।
সুতরাং যারা উক্ত ঘটনা বর্ণনা করেন তারা মূলত বেলাল (রা.)-এর উপর মুখের জড়তার অপবাদ আরোপ করেন। বাস্তবে যার কোনো ভিত্তি নেই। কাজেই এ জাতীয় ভিত্তিহীন ঘটনা বর্ণনা করা থেকে সকলের বিরত থাকা উচিৎ।
আততাযকিরা পৃ. ২০৭; আল মাকাসিদুল হাসানাহ পৃ. ৩৯৭
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم