প্রশ্ন
যাকাত কি সরকার উশুল করে বণ্টন করবে না ব্যক্তিগতভাবে আদায় করবে
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
ইসলামি বিধান অনুযায়ী মৌলিকভাবে রাষ্ট্রকেই যাকাত সংগ্রহ করতে হবে। কুরআন হাদিস থেকেই বিষয়টি প্রমাণিত। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
خُذْ مِنْ أَمْوَالِهِمْ صَدَقَةً تُطَهِّرُهُمْ وَتُزَكِّيهِم بِهَا
‘তাদের সম্পদ থেকে সদকা নাও। এর মাধ্যমে তাদেরকে তুমি পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে।’ [সূরা তাওবা, আয়াত: ১০৩]
রাসূল (সা.) ছিলেন রাষ্ট্র প্রধান। আর আয়াতে রাসূল (সা.)-কে উদ্শ্যে করেই যাকাত সংগ্রহ করতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।
হাদিস শরিফে এসেছে, রাসূল (সা.) যখন মুআয ইবনে জাবাল (রা.)-কে ইয়ামেনের গভর্নর করে পাঠিয়ে ছিলেন তখন তাকে বলেছিলেন,
تُؤْخَذُ مِنْ أَغْنِيَائِهِمْ وَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ
‘যেটা (যাকাত) ধনীদের নিকট থেকে গৃহীত হবে আর দরিদ্রদের মাঝে প্রদান করা হবে।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ১৩৯৫]
এ হাদিস থেকেও বুঝা গেল, রাষ্ট্র যাকাত সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট খাতে তা বিতরণ করবে।
কুরআনে যাকাতের আটটি খাতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। তন্মধ্যে একটি খাত হল, যারা যাকাত সংগ্রাহক। মানুষের কাছ থেকে যাকাত সংগ্রহ করে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা করবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
وَالْعَامِلِينَ عَلَيْهَا
‘যাকাত গ্রহণে নিয়োজিত কর্মচারীদের জন্য।’ [সূরা তওবা, আয়াত: ৬০]
এ থেকেও বুঝা যায় যাকাত সংগ্রহের কাজ রাষ্ট্রের। রাষ্ট্রকে যাকাত সংগ্রহের দায়িত্ব দেওয়ার কয়েকটি কারণ হতে পারে। যেমন,
১. গরিব যখন ধনী ব্যক্তি থেকে যাকাত নেয় তখন সে হীনম্মন্যতায় ভুগে। তার কাছে মনে হতে পারে যে, তাকে ভিক্ষা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যখন সে রাষ্ট্র থেকে নিবে তখন তার মাঝে এ হীনম্মন্যতা থাকবে না। কারণ, সে তার হক রাষ্ট্র থেকে গ্রহণ করছে।
২. ব্যক্তির উপর যাকাত আদায়ের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া হলে যাকাত ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা থেকে যায়। কিন্তু এ দায়িত্ব রাষ্ট্রের হাতে থাকলে যাকাত ফাঁকি দেওয়ার সুযোগ থাকবে না। কারণ, রাষ্ট্রের জানা আছে কে ধনী, আর কে গরিব।
৩. দারিদ্র্য বিমোচনে রাষ্ট্রের বিভিন্ন পরিকল্পনা থাকে। সে হিসেবে রাষ্ট্র যাকাত সংগ্রহ করে যথাযথ ক্ষেত্রে ব্যয় করতে পারবে।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم