প্রশ্ন
আমি কুরআনের এক আয়াতে নাসূহা শব্দটি পেয়েছি। কিছুদিন আগে এক বক্তাকে বলতে শুনলাম, নাসূহা এক ব্যক্তির নাম। সে এমন খাঁটি তওবা করেছে যে, আল্লাহ তাআলা তার নাম কুরআনে উল্লেখ করে দিয়েছেন। আমি জানতে চাচ্ছি, উক্ত বক্তার কথা কি সঠিক? নাসূহা কি কোনো ব্যক্তির নাম?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
আপনি যে আয়াতটির কথা উল্লেখ করেছেন তা নিম্নে দেওয়া হল। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا تُوبُوا إِلَى اللَّهِ تَوْبَةً نَصُوحًا
‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহর কাছে তাওবা কর, খাঁটি তাওবা।’ [সূরা তাহরীম, আয়াত: ৮]
আয়াতে তাওবায়ে নাসূহা দ্বারা উদ্দেশ্য হল, খাঁটি তওবা। এমন তওবা যার পর ব্যক্তি আর গুনাহের কাজ করে না এবং গুনাহের ইচ্ছাও তার আসে না। [তাফসীরে ইবনে কাসীর ৮/১৯০]
নাসূহা নামে এমন কোনো ব্যক্তি নেই যার তওবার মত তওবা করার কথা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। যারা এ জাতীয় ভিত্তিহীন কথা বলে থাকে তারা ভ্রান্তির উপর রয়েছে। ইবনে তাইমিয়্যাহ (রহ.) লেখেন,
‘যে সকল মূর্খরা বলে থাকে যে, নাসূহ রাসূল (সা.)-এর যুগের এক ব্যক্তি। মানুষকে আল্লাহ তাআলা তার তওবার মত তওবা করতে বলেছেন, সে সকল ব্যক্তিরা মিথ্যারটনাকারী, মিথ্যুক, হাদিস, তাফসীর, ভাষা ও কুরআনের অর্থ সম্পর্কে অজ্ঞ। কেননা, এই নামে আল্লাহ তাআলা কোনো ব্যক্তিকে সৃষ্টি করেননি। পূর্ববর্তীদের মাঝেও নাসূহ নামে কোনো ব্যক্তি নেই। উলামায়ে কেরামের কেউই এ জাতীয় কোনো ঘটনা বর্ণনা করেননি।…. আর কেউ যদি বলে, আয়াতে নাসূহ দ্বারা একজন পুরুষ বা মহিলা উদ্দেশ্য। যে ঈসা (আ.) বা অন্য কোনো নবির যুগে ছিল, তাহলে সেও মিথ্যাবাদী। তার জন্য আবশ্যক হল তওবা করা। যদি সে তওবা না করে তাহলে মুসলমানদের ঐক্যমতের ভিত্তিতে তাকে শাস্তি প্রদান করা হবে।’ [মাজমুউল ফাতওয়া ১৬/৫৯]
কাজেই এগুলো সব ভিত্তিহীন কথা। এ জাতীয় ঘটনা বর্ণনা করা থেকে বিরত থাকা সকল মুসলমানের কর্তব্য।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم