প্রশ্ন
আমাদের এলাকায় অনেক পুরাতন একটি কবরস্থান আছে। এখন আর সেখানে কোনো মৃতকে দাফন করা হয় না। মৃতদেরকে দাফন করার জন্য এলাকায় নতুন একটি কবরস্থানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখন এলাকার লোকেরা চাচ্ছে, এই পুরাতন কবরস্থানকে ভেঙ্গে স্কুল বানাতে। আমার প্রশ্ন হল, যেহেতু এই কবরস্থানটি এখন প্রয়োজন পড়ছে না, তাই একে ভেঙ্গে স্কুল বানাতে শরিয়তের দৃষ্টিতে কোনো সমস্যা আছে কি?
উত্তর
بسم الله الرحمٰن الرحيم. حامدا و مصليا و مسلما
শরিয়তের দৃষ্টিতে ওয়াকফকৃত স্থান যে উদ্দেশ্যে ওয়াকফ করা হয়, সে উদ্দেশ্যেই তাকে ব্যবহার করতে হয়। অন্য কোনো উদ্দেশ্যে তাকে ব্যবহার করা যায় না। হাদিস শরিফে এসেছে,
‘উমর (রা.) একটি খেজুর বাগান ওয়াকফ করতে চাইলে রাসূলুল্লাহ (সা.) তাকে বলেছিলেন: ‘তুমি মূল সম্পত্তিটি এভাবে সদকা (ওয়াকফ) কর যে,لاَ يُبَاعُ وَلاَ يُوهَبُ وَلاَ يُورَثُ، وَلَكِنْ يُنْفَقُ ثَمَرُهُ তা বিক্রি করা যাবে না, কাউকে দান করা যাবে না এবং এতে উত্তরাধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। এর থেকে উৎপন্ন ফলফলাদি (নির্ধারিত খাতে) ব্যয় হবে। এরপর উমর (রা.) তা ঐভাবে সদকা (ওয়াকফ) করেছিলেন।’ [সহিহ বুখারি, হাদিস: ২৭২৪]
কাজেই ঐ কবরস্থানে স্কুল নির্মাণ করা বৈধ হবে না। তবে যেহেতু ঐ স্থান বর্তমানে কবরস্থান হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে না এবং ভবিষ্যতেও ব্যবহার হবে না, তাই তা ভেঙ্গে সর্বোচ্চ মসজিদে রূপান্তর করা যাবে। কারণ মসজিদ নির্মাণও ওয়াকফের বিধানের আওতাভুক্ত। সহিহ বুখারির ব্যাখ্যাকার আল্লামা বদরুদ্দীন আইনী (রহ.) তার কিতাবে লিখেন,
‘যদি কোনো কবরস্থানে মৃতকে দাফন করার কোনো প্রয়োজন অবশিষ্ট না থাকে তাহলে সেই কবরস্থানকে মসজিদে রূপান্তর করতে কোনো সমস্যা নেই। কারণ, মসজিদও ওয়াকফের বিধানের আওতাভুক্ত একটি বিষয়।’ [উমদাতুল কারী ৪/১৭৯]
এক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয়, যদি সেই কবরস্থানে কখনো মৃত দাফন করার প্রয়োজন দেখা দেয় তাহলে মসজিদ নির্মাণ করাও বৈধ হবে না।
আল্লাহ তা‘আলাই সবচেয়ে ভালো জানেন।
و الله تعالى أعلم بالصواب
وصلى الله تعالى على رسوله وعلى آله وسلم